বারো মাসই অভিসার
সুমন মুন্সী,কলকাতা
গুরু আমার বিজয়কৃষ্ণ গোসাঁই কুলমণি,
পাদপদ্মে ঠাঁই যেন হয় এই প্রার্থনা করি।
মাঝরাত ওই শ্যামের বাঁশী বাঁজলো এমন সুরে,
চঞ্চলা হয় রাধিকার মন, আর কি ঘরে থাকে?
অভিসারের টানে তিনি যমুনাতে যাবেন,
কলঙ্কিনী রাধারানী এ গাঞ্জনাও শোনেন ।
বারোমাসে নানা ছলে শ্যামের কাছে যায়,
কলঙ্কিনী হলেন রাধিকা পেয়ে শ্যামরায় ।
সোনার চেয়েও দামি এ ধন,সকল ভক্তই চায়,
ভাগ্যে থাকলে তবেই এ কলঙ্ক কপাল করে পায় ।
বারো মাসের প্রেমের নানান কথা করি নিবেদন,
বাসুদেবই জগৎ চালান সেটাই জেনো কারণ ।
চৈত্র দিনের ঝরা পাতা, বৈশাখী ওই ঝড়,
জ্যৈষ্ঠ মাসে জামাই এলো নিয়ে আম কাঁঠালের বর ।
আষাঢ় মাসে মুখ কেন ভার মেঘ করেছে বলে,
শ্রাবণ হয়ে ঝরলো ধারা, বর্ষা এলো ঝেঁপে ।
ভাদর মাসে গরম ভারী,গুমোট করা দিন,
চিন্তা কেন? আসবেন মা, ডাক দিয়েছে অশ্বিন ।
পুজোর আগে বাজ পড়ে কেন,শঙ্করের রাগ ভারী,
উমা গেছেন বাপের বাড়ী, সংসারেতে দাঁড়ি।
কার্তিক মাসে, যেন মা সকল ঘরেতে আসেন,
নতুন ধানের আগমনী সোনার বাংলায় আনেন ।
অঘ্রানেতে ভারী মজা নবান্ন আর রাস,
পৌষ মাসে পিঠেপুলি খেয়ে পুরে মনের আশ ।
মাঘ মাসেতে বেজায় শীত বাঘেও তা মানে,
বড়দিনের ছুটিতে সবাই আমোদ করে থাকে ।
ফাগুন শুধু আগুন জ্বালায়, পলাশ গাছের ডালে,
মনের মানুষ সাথে নিয়ে শ্রীকৃষ্ণ হোলি খেলে।
ঘুরে ফিরে চৈত্র যায় সংক্রান্তির দিনে,
নতুন বছর ঘুরে আসে পয়লা বৈশাখের দিনে ।
সারা বছর রাধা তাই অভিসারেই থাকেন,
শ্যাম আমার দুস্টু ভারী ঘরেতে না তোলেন ।
প্রেমের খেলা ভুবন মাঝে ছড়িয়ে শুধু দেন।
ব্রহ্মদেব সৃষ্টি করে, কৃষ্ণ হাতে জগৎ তুলে দেন ।
শ্রদ্ধা থাকুক সবার মনে, কৃষ্ণ আছেন জেনে,
ষোলকলায় পূর্ণ তিনি,তাই পুরুষোত্তম মেনো,
কৃষ্ণ কথাই শুনিয়ে যাই, নাম সুমন জেনো।
অন্তিমেতে বলে যাই লোক শিক্ষা ছলে,
রাধাকৃষ্ণের মিলন যেন আমাদেরই অন্তরে ।