গণতন্ত্রের উৎসব রাম রহিম নয় মানুষের জয় হোক
মেরি পাল ,কলকাতা :
গ্রীষ্মের দাবদাহের তীব্রতার সাথে ভোটের বাজারে রাজনৈতিক দলগুলির ধর্মের তারজার তীব্রতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে । সব রাজনৈতিক দলই ধর্মের ধ্বজা তুলে মানুষের মন জয় করার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে । যখনই রাজনৈতিক দলগুলির পিঠ দেওয়ালে ঠেকে যায় তখনই ধর্মীয় বিভেদের রাজনীতি শুরু করে দেয় ।
ধমীয় বিভেদ ভয়ঙ্কর রূপ নিয়ে মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে ,মানবিকতাকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে পারে এই সব জানার পরেও রাজনৈতিক দলগুলি তাদের স্বার্থের রাজনীতি থেকে পিছু হাঁটছে না। ভোট জেতার পরে এই নেতাদেরই বলতে শোনা যাবে মানুষের জয় হলো . সত্যি কি মানুষের জয় হলো ? মানুষ কি এই বিভেদের জয় চেয়েছিলো ? নাকি চেয়েছিলো মানুষের জয় হোক । মানুষ ত ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধিকে নির্বাচন করে যাতে সেই প্রতিনির মাধ্যমে মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ , অর্থনীতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে সার্বিক উন্নতি ঘটে । মানুষের মনে এখন এটাই সবথেকে বড় প্রশ্ন তাদের প্রতিনিধিরা সাধারণ মানুষের জন্য ঠিক কি কি করল । কেন আজও আমাদের দেশ শিক্ষা ,স্বাস্থ ও অর্থনীতিতে এত পিছিয়ে ।
সরকারি স্কুলগুলি আজ ধুকতে শুরু করেছে গ্রাম ,শহর নির্বিশেষে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে অভিভাবকরা চাইছেন বেসরকারি স্কুলে ছেলে মেয়েদের পড়াতে কারন সরকারি স্কুলের পরিকাঠামো ,শিক্ষা ব্যাবস্থার মান বেসকারি স্কুলের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে যারা দেশের ভবিষৎ তাদের ভবিষৎ নিয়ে কি আদেও কারোর কোন মাথা ব্যথা আছে । প্রতিবছর মাধ্যমিক , উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার রেজাল্ট নানা গাফিলতি ধরা পরে , বিচার পাওয়ার জন্য ছাত্র ছাত্রীদেড় কোটের দ্বারস্থ হতে হয় ।
ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এই রকম ছেলে খেলার পরেও শিক্ষা দপ্তরের কিছুই এসে যায় না .শিক্ষিত ছেলে মেয়েদের কাজের খোঁজে নিজের রাজ্য কিংবা দেশ ছেড়ে বাইরে যেতে হচ্ছে । এদেশের কর্মসংস্থানের অভাবটা এতটাই তীব্র হয়েছে যে মাধ্যমিক যোগ্যতার পিয়ন পদের জন্য এম .এ পাস্ ছেলে মেয়েরা আবেদন করছে | এই পরিস্থিতে দেখার জন্যই কি মানুষ তাদের জন প্রতিনিধি নির্বাচন করে | সাধারণ মানুষ ত শুধু স্বছল সুরক্ষিত একটি জীবন চায় , তাও তাদের কাছে প্রহসনের মতো হয়ে গেছে |
গ্রামের স্বাস্থকেন্দ্রগুলি এখনো পরিকাঠামোর এভাবে ভুগছে.অস্বাস্থকর পরিবেশে রোগ নিরাময় করতে এসে মানুষ অনেক সময় আরও বেশি অসুস্থ হয়ে উঠছে . আর কুকুর ,বিড়ালের উৎপাতের কথা শহরের বড় বড় সরকারি হসপিটালেও প্রায় সোনা যায় . একটু ভালো পরিষেবা পাওয়ার জন্য মানুষকে এখন বেসরকারি নার্সিংহোমের উপরেই নির্ভর করতে হয়।
রাজনৈতিক দলগুলিকে একেই মানুষের জয় বলে । মানুষ ত কখনোই এমন জয় চায়নি তারা ত শুধু চেয়েছিলো জাতপাতহীন বিভেদহীন একটা সুরক্ষিত জীবন । তাহলে রাজনৈতিক দলগুলি ধর্মের ধ্বজা উঠিয়ে বিভেদের রাজনীতি করছেন কি নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে , যা গণতান্ত্রিক দেশে একেবারেই কাম্য নয় । এক বৃন্তে দুটি কুসুমকে পৃথক করার রাজনীতি না করে দেশের উন্নতির কথা ভাবলে বোধ হয় সাধারণ মানুষের সমর্থন পেতে কোন রাজনৈতিক দলেরই অসুবিধা হবে না । মানুষ শুধু এখন অপেক্ষা করছে নেতাদের সেই চেতনা জাগ্রত হওয়ার । এই এক তরফা কথা আর নিশ্চিত করে বলা যায় না ।
না হলে পাঁচ বছর শোষিত হবে জেনেও ৫০০-১০০০ বা একটা পাইটের বোতল আর বিরিয়ানির প্যাকেটের লোভে মিছিলে ভিড় করতো না। অশিক্ষিত ধান্দাবাজদের মহান নেতা নেত্রীদের সাথে তুলনা করতোনা । ম্যাট্রিক পাশ হাতকাটা পঞ্চুকে দাদা কেমন আছেন বলে গদগদ হতো না ।
এবার পাঁকে পদ্ম না কাদায় ঘাসফুল, নাকি সন্ধানী হাত কাস্তে হাতে মাঠের ধান কেটে নিয়ে যাবে তা ২৩শে মে জানা যাবে , কিন্তু এ কথা নিশ্চিত গণতন্ত্রের ভগবান নিদ্রা গিয়েছেন গোলযোগ সইতে পারেন না ।
তাই আসুন গণতন্ত্রের উৎসবে শহীদ টিয়ারুলের কবরে বসে গণতন্ত্রের আগুনে দম দিতে দিতে বলি জয় কাগুজে বাঘ ভারতের গণতন্ত্রের জয়। , হয় তো কোনো দিন নেশা কাটলে দেখবো আর একজন বীর সুভাষ নতুন আজাদ হিন্দ নিয়ে এসেছেন যেখানে রাম মানুষ না অবতার সে প্রশ্ন নেই, ইসলাম কে সম্মান কোনো অন্যায় নয় । গৌতম বুদ্ধের দেশ মানুষ আর সকল জীবকে সমান সম্মানে দেখবে ।