SUSWM এর তরফে সাহিত্যিক নবকুমার বসু,ড. পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায়,ড. ধীরেশ চৌধুরী অনন্য সম্মানে ভূষিত হলেন
২৩, জানুয়ারী,কলকাতা
সিদ্ধার্থ ইউনাইটেড সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার মিশন (SUSWM) কলকাতার সমাজকল্যান মূলক সংস্থার মধ্যে অন্যতম। বৌদ্ধধর্মের কল্যাণকর মানবসেবার আদর্শকে সামনে রেখে নীরবে যে কয়েকটি সংস্থা কাজ করে যাচ্ছেন তাদের মধ্যে SUSWM অগ্রগণ্য।
সংস্থার জেনারেল সেক্রেটারী সন্ন্যাসী ডক্টর বুদ্ধপ্রিয় মহাথেরো এবং প্রেসিডেন্ট অস্মিতা সিনহা বড়ুয়া নেতাজীর ১২৫তম জন্মদিবস কে আধার করে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। বিশিষ্ট চিকিৎসক এবং সাহিত্যিক দের সম্মান জানানোর মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয় ।
সংস্থার জেনারেল সেক্রেটারী সন্ন্যাসী ডক্টর বুদ্ধপ্রিয় মহাথেরো স্বাগত ভাষণে সমাজে চিকিৎসক ও সাহিত্যিক দের সম্মান ও বিশেষ অবদানের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং ভগবান তথাগত বুদ্ধের আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন। উপস্থিত ছিলেন দেশ বিদেশের আরো বৌদ্ধ সন্ন্যাসীগণ ও এবং বিশিষ্টজনেরা ।
এই অনুষ্ঠানে সম্মানিত হলেন সাহিত্যিক নবকুমার বসু,ড. পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ড. ধীরেশ চৌধুরী ।
সাহিত্যিক নবকুমার বসু একজন বাঙালি সাহিত্যিক এবং প্রবাসী শল্য চিকিৎসক। তিনি বিখ্যাত বাঙালি সাহিত্যিক সমরেশ বসুর সুযোগ্য পুত্র। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমএস উত্তীর্ণ হওয়ার পর শল্যচিকিৎসক হিসাবে পেশা শুরু করেন। ১৯৯৩ সালে তিনি ইংল্যান্ডে প্রবাসী হন
বিদেশে বাংলা ভাষার প্রসারে সদা উৎসাহী | অজস্র ছোটগল্প ছাড়াও লিখেছেন ভ্রমনকাহিনি, রহস্য কাহিনি ও ধারাবাহিক উপন্যাস |
১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে তার লেখা ছোটগল্প দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তার পিতা সমরেশ বসু এবং মাতা গৌরী বসুর জীবনের উপর ভিত্তি করে তার ‘চিরসখা’ উপন্যাসটি দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।
তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হলো সুধাবিষে মিশে, শ্রীময়ী মা, চিরসখা,পঞ্চাশটি প্রিয় গল্প,পঞ্চাশটি গল্প, ফুলের দ্বিতীয় ঋতু, ফায়দা ও অন্যান্য গল্প,চমকে বেড়ায় দৃষ্টি এড়ায়, হিয়া পরবাস,যুবরানি ডায়ানা ইত্যাদি ।
অনুষ্ঠানে নবকুমার বাবু সুচিন্তিত মতামত সহ বাংলা সাহিত্যেরর বাণিজ্যিকরণ তার টিকে থাকার জন্য কতটা জরুরি তারও ব্যাখ্যা করেন। ২৩শে জানুয়ারী শ্রী বসু ও তাঁর স্ত্রী গাইনোকোলজিস্ট মিসেস বসুর বিবাহ বার্ষিকী হওয়ার জন্য বিশেষ আবেগঘন মুহূর্ত ছিল। সন্যাসী বুদ্ধপ্রিয় মহাথেরো ও সমবেত সকল গুনগ্রাহী তাঁদের কল্যাণ কামনার মধ্যে দিয়ে অভিনন্দন জানালেন ।
ড: ধীরেশ চৌধুরী বার্ধক্য জনিত বিষয়ের বিশেষজ্ঞ তৎসহ তিনি একজন কবি ও সুসাহিত্যিক, তিনি কবিতা পাঠের মধ্যে দিয়ে গভীর জীবন বোধের যে দর্শন তুলে ধরেন নেতাজিকে স্মরণে রেখে তা এ কথাই বোঝায় যে দেশের সুসন্তান আজও নেতাজিকে তাঁর প্রাপ্য সম্মান জানাতে ভোলেন না।
ভগবান বুদ্ধের জননী ছিলেন মায়া দেবী, জন্মের সাত দিনের মাথায় মারা যান। পরে মাসী গৌতমীর দ্বারা মানুষ হন। যাঁর থেকেই গৌতম নামকরণ।যশোধরা বুদ্ধের পত্নী ছিলেন। সেই মহান নারী যশোধরা কে শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি কবিতা পাঠ করেন এবং বলেন যে সকলের উচিত যে মহিয়সী পত্নীর কথা মনে রাখা, যাঁর কোল আলো করে সিদ্ধার্থ পুত্র এসেছিলেন এবং পরিশেষে মহাজ্ঞান লাভের মধ্যে দিয়ে বুদ্ধের জীবনের মহান আদর্শকে জানতে পেরেছিলেন, ছিলেন গৌতমের সাধনার নীরব সহধর্মিনী । নারী জাতির প্রতি এই শ্রদ্ধার ফল্গুধারার তাঁর জন্য প্রশংসার দাবি রাখে।
পরিশেষে বলতে হয় ড. পলাশ বন্দোপাধ্যায়ের কথা । পেশায় শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ড. পলাশ বন্দোপাধ্যায়ের নেশা সাহিত্য ও সমাজ সেবা । সুসাহিত্যিক ও বিদগ্ধ কবি হিসাবে তিনি ইতিমধ্যে পেয়েছেন দলিত সাহিত্য একাডেমী ও আইবিজি নিউজ গোল্ডেন হার্ট অ্যাওয়ার্ড সহ নানা পুরস্কার। অথচ জীবনদর্শনের অধিকাংশটা জুড়ে প্রান্তিক মানুষদের আনাগোনা। জীবনের নানা রঙের আবেগ কে সাজিয়ে কঠিন প্রশ্নকে জীবনাদর্শের ভাবে প্রকাশ করে তাঁর কবিতা। নীরবে সাহিত্য সেবার মধ্যে দিয়ে ঐতিহ্যপূর্ণ পরিবারের আদর্শ কে তুলে ধরেছেন।
পুরস্কার পেয়ে তিনি সকলকে অভিনন্দন জানালেন সাথে সন্ন্যাসী বুদ্ধপ্রিয় মহাথেরো ও তাঁর সকল সহযোগীদের জানালেন কৃতজ্ঞতা ।
এই অনুষ্ঠানে সাংবাদিক ও আইবিজি নিউজ এর সম্পাদক তথা অল ইন্ডিয়ান রিপোর্টার এসোসিয়েশন ইন্টারন্যাশনালের জেনারেল সেক্রেটারি সুমন মুন্সী কে বিশেষ সম্মান প্রদান করা হয়। সন্ন্যাসী ডক্টর বুদ্ধপ্রিয় মহাথেরো ও অন্য সকলের কল্যাণ কামনা করে তথাগত বুদ্ধের কাছে প্রার্থনা করেন শ্রী সুমন মুন্সী। অনুষ্ঠানে নিজের কবিতা পাঠ করে শোনালেন সকলের অনুরোধে। উক্ত অনুষ্ঠানে বিশ্ব মানবতার জয় সম্পর্কে আশাবাদী মনোভাব ব্যক্ত করা হয় ।