দুয়ারে সাংবাদিক – বাঁকুড়ার বাচ্চা ছেলে রাখহরি মন্ডল স্কুলে ভর্তির ৩২০ টাকার জন্য মুড়ির বস্তা নিয়ে পথে ঘুরছে
অরূপ মিত্র, কলকাতা
পেশায় শিক্ষক অরূপ মিত্র ঘুরে বেড়ান বাংলার নানা অঞ্চলে খুঁজে বেড়ান মানুষের দুঃখ বেদনার কথা আর তাই তুলে ধরেন সমাজের সামনে আইবিজি নিউজ তাঁর এই অন্নেষণে এক সহযোগী হয়ে মানুষের কথা তুলে ধরেন আপনাদের জানার জন্য ।
আজকের ছেলেটির কথা শুনুন অরূপ বাবুর নিজের কথায়:
লোকপুর মোড় সংলগ্ন রাস্তায় যেতে যেতে দেখলাম ১৩-১৪ বছর বয়সের এক কিশোর সাইকেল চালাতে চালাতে বার বার পিছন ফিরে আমার মুখপানে তাকাচ্ছে, সাইকেলের পেছনে এক বড়ো কিছু বোঝাই করা সাদা বস্তা। একটু দায়িত্ববোধ দেখিয়ে ছেলেটার সামনে গিয়ে তাকে উদ্দেশ্য করে বললাম……… “ভাই একটু সাবধানে চালা,দেখছিস তো কত গাড়ি রাস্তায় ” অপ্রত্যাশিতভাবে ছেলেটি বলল…. “মুড়ি নেবে কি?” এভাবে অসংযত উত্তর পেয়ে কৌতুহলবশত ছেলেটিকে থামিয়ে তার কাছ থেকে গল্প শুনতে শুনতে পায়ের তলার মাটি সরে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছিল।
এবার আসি ঘটনায়- কথা বলে জানলাম ছেলেটির নাম-রাখহরি মন্ডল।বাঁকুড়া -১ ব্লকের জগদল্লার পাশে দাবড়া নামে এক গ্রামে বাড়ি। মুড়ি বিক্রি করা তার পেশা নয়, সে জগদল্লা হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র। ২০২১ শিক্ষাবর্ষে দশম শ্রেনিতে ভর্তির জন্য স্কুল থেকে ৩২০ টাকা চাওয়া হয়েছে, সেই টাকা জোগাড়ের জন্য মায়ের হাতে ভাজা মুড়ি বেচতে সে শহরে এসেছে। সে ছাড়াও বাড়িতে রয়েছে তার মা, অসুস্থ বাবা ( নার্ভের রুগী) কিছু করতে পারেন না, হাত কাঁপে। আর এক ছোটো ভাই,যে এবছর ক্লাস ফাইভ থেকে সিক্সে উঠবে। ছেলেটার জেদ, আর অক্লান্ত সাধনার শরিক হতে বললাম ভাই তোর স্কুলের ভর্তির টাকা আমি দিয়ে দিচ্ছি, যা আর মুড়ি বেচতে হবে না। পড়াশোনা কর মন দিয়ে।সটান জবাব এলো না এভাবে টাকা নিতে পারবো না। মা বকবে! অনেক জোরাজোরি করেও টাকা টা ওর হাতে দিতে পারলাম না। শেষমেশ বলল যদি টাকা দিতে চাও তো মুড়ি নাও। মুড়ির দাম ১০ টাকা প্রতি পাই। এক পাই মুড়ি নিয়ে ১০০ টাকার একটা নোট ধরিয়ে বললাম যা আর ৯০ টাকা ফেরৎ দিতে হবে না। তাতেও তার আপত্তি। তার নিদান সে এভাবে ঠকাতে পারবে না আমাকে, কারণ তার মা তাকে সেই কথাই বলেছে।
ছেলেটির অদম্য জেদ, আত্মপ্রত্যয় আর সততার উপর আস্থা করে আমি বলতে পারি পাশাপাশি কেউ যদি ঐ বাচ্চা টিকে সাহায্য করতে চান তাহলে ছেলের বাড়ির নাম্বার – 7029553025