কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনছে

0
410
COAL INDIA 2
COAL INDIA 2
0 0
Azadi Ka Amrit Mahoutsav

InterServer Web Hosting and VPS
Read Time:13 Minute, 0 Second

কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনছে

কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড সাধারণ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত গ্রামবাসীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা খাতে ২৭ কোটি ব্যয় করেছে

By PIB Kolkata

ভারতের শক্তি নিরাপত্তার মেরুদণ্ড হিসেবে প্রায়শই কোল ইন্ডিয়া লিমিটেডকে কৃতিত্ব দেওয়া হয়। রাষ্ট্রায়ত্ত এই সংস্থাটি দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে উন্নয়নের উদ্দেশ্যগুলি পূরণেও সক্রিয়ভাবে যুক্ত রয়েছে। দেশের একাধিক পিছিয়ে পড়া ও প্রত্যন্ত গ্রামে রাষ্ট্রায়ত্ত কোল ইন্ডিয়া ও তার সহযোগী সংস্থাগুলি মৌলিক সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি করেছে। এর ফলে গ্রামবাসীদের জীবনযাত্রায় প্রভূত উন্নতি ঘটেছে। ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেড পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে সৌরবিদ্যুৎ, অন্যান্য পরিবেশ-বান্ধব সুযোগ-সুবিধা ও উৎকৃষ্ট শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা গড়ে তুলতে রাষ্ট্রায়ত্ত কোল ইন্ডিয়া সংস্থাকে সহায়তা করছে।    “এখন দিবারাত্রি ২৪ ঘন্টাই, সপ্তাহে সাতদিন সৌরবিদ্যুতের বাতি জ্বলে। তাই আমি রাতেও পড়াশোনা করতে পারি। আগের তুলনায় এখন আমি পরীক্ষায় বেশি নম্বর পাচ্ছি” – একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী রোশনী হেমব্রম এই কথা বলার সময় তাঁর চোখ উজ্বল হয়ে উঠেছিল। ভবিষ্যতে শিক্ষিকা হয়ে ওঠার প্রত্যাশা নিয়ে রোশনী পুরুলিয়ার জেলার পিছিয়ে পড়া নেতুড়িয়া ব্লকের কয়লা খনি এলাকার এক প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা। অবশ্য এখন তার জীবনে পরিবর্তন এসেছে।   দ্বাদশ শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষায় সে আরও ভালো ফলাফলের বিষয়ে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। সে স্বপ্ন দেখছে শিক্ষিকা হয়ে ওঠার, যা তার জীবনযাত্রার উৎস হয়ে উঠবে। নেতুড়িয়া ব্লকের লালপুর গ্রামের সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সাবারানী মণ্ডল এখন তাঁর গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাওয়ায় অনেক বেশি খুশী। তাঁর কথায়, “এখন সাময়িক বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকলেও আমরা পঠনপাঠনে কোনও সমস্যার সামনে পড়ি না। কারণ আমাদের কাছে সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা রয়েছে এবং বিদ্যালয়ে এই ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে।” কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড ও তার সহযোগী সংস্থা ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেডের কঠোর প্রয়াস ও আন্তরিকতার ফলেই নেতুড়িয়া ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় লক্ষ্যণীয় পরিবর্তন ঘটেছে। প্রকৃতপক্ষে এই প্রয়াস দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যে একটি পদক্ষেপ।    পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম একটি পিছিয়ে পড়া জেলা পুরুলিয়া। এই জেলায় ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেড একাধিক কয়লা খনির দায়িত্বে রয়েছে। স্থানীয় মানুষ কয়লা-ভিত্তিক লেনদেন বা কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল। এমনকি, এই কয়লা খনি এলাকাটি খরাপ্রবণ এবং বৃষ্টিপাত হয় অনিয়মিত। এখানকার অধিকাংশই ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক। জলাভাবের দরুণ এখানে কৃষিকাজ স্বাভাবিক ছন্দে হয় না এবং বৃষ্টি অনিয়মিত হওয়ার দরুণ কৃষি উৎপাদনশীলতাও কম। এরকম পরিস্থিতিই দারিদ্র্যের কারণ। অধিকাংশ পরিবারে এখনও কাঠের উনুন জ্বলে। তাই, রান্নার মূল জ্বালানিই হল শুকনো কাঠ। অবশ্য কখনও কখনও কেরোসিনের ব্যবহারও হয়। অধিকাংশ পরিবারেই এখনও শৌচাগার নেই। তাই, সাধারণ মানুষ প্রাকৃতিক কাজকর্মের জন্য প্রকাশ্য স্থানেই যেতে বাধ্য হন। স্থানীয় স্বশাসিত সংস্থা ও সরকার গ্রামগুলিতে উন্নয়নের প্রচেষ্টা গ্রহণ করলেও খনি এলাকার এখনও বহু গ্রামেই মৌলিক সুযোগ-সুবিধা পৌঁছয়নি। এই গ্রামগুলিতে দিবারাত্রি বিদ্যুৎ সংযোগ থাকে না, রান্নার জন্য জ্বালানির অভাব রয়েছে। এমনকি, সড়ক ও বিদ্যালয়-শিক্ষার পর্যাপ্ত সুযোগ নেই।    কয়লা খনি এলাকাগুলিতে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নে কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড তার ভূমিকার ব্যাপারে সচেতন রয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত এই সংস্থাটি পুরুলিয়া জেলার নেতুড়িয়া ব্লকের ৩৮টি গ্রামে সাধারণ সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে। প্রাথমিকভাবে গ্রামগুলিতে পরিবারের প্রকৃত সংখ্যা জানার জন্য সমীক্ষা চালানো হয়। জাতীয় স্তরে স্বীকৃত সামাজিক ক্ষেত্রের শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান মুম্বাইয়ের টাটা ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সেস নেতুড়িয়া ব্লকের গ্রামগুলিতে এই সমীক্ষা চালায়। পরিবেশ ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত দিল্লির একটি অগ্রণী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এনার্জি অ্যান্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট (টেরি) এই সমীক্ষার কাজে মুম্বাইয়ের প্রতিষ্ঠানটিকে সাহায্য করে।    এই ব্লকের গ্রামবাসীদের উন্নয়নের মূলস্রোতে নিয়ে আসতে কয়েক বছরের মধ্যেই ব্যাপক উন্নয়নমূলক প্রয়াস গ্রহণ করা হয়। এর ফলে, সাধারণ গ্রামবাসীদের জীবনযাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন আসে। পরিবারে বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে সৌরবিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। চিহ্নিত কয়েকটি পরিবারে ইন্টিগ্রেটেড ডোমেস্টিক এনার্জি সিস্টেম বসানো হয়। এ ধরনের একটি ইউনিট থেকে সংশ্লিষ্ট পরিবারে এলইডি বাল্ব, মোবাইল চার্জের সকেট, একটি আধুনিক রান্নার স্টোভ জ্বালানো সম্ভব। আধুনিক রান্নার স্টোভ কাঠের জ্বালানির তুলনায় অনেক বেশি কার্যকর এবং চিরাচরিত কাঠের উনুনের তুলনায় অনেক কম ধোঁয়া নির্গত করে। পরিবারগুলিকে সৌরবিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার পাশাপাশি এলাকায় ১১০টি সৌরবিদ্যুৎচালিত সড়ক আলোকিতকরণ বাতি বসানো হয়েছে। সৌরবিদ্যুৎচালিত এই ধরনের ইউনিটগুলির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সুফলভোগী পরিবারগুলিকে পরিষেবা সহায়তা নম্বর দেওয়া হয়েছে, যাতে তাঁরা যে কোনও গোলোযোগের সময় দ্রুত সহায়তা চাইতে পারেন। এখনও পর্যন্ত নয় হাজারটি পরিবারকে এই সৌরবিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।    কৃষিক্ষেত্রে স্থানীয় কৃষকদের সচেতন করে তুলতে ১০টি গ্রামের ১,২৫০ জন কৃষককে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই কৃষকদের আধুনিক কৃষি সরঞ্জামের পাশাপাশি ফলমূল ও শাকসব্জির চারাগাছ এবং ছাগল বিতরণ করা হয়েছে। অধিক পরিমাণে ধান উৎপাদনের জন্য এই কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট কিছু জলাশয়ে চারাপোনা চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এমনকি, তাঁদের মাশরুম বা কৃত্রিম ছত্রাক চাষের পদ্ধতি সম্পর্কেও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে স্থানীয় কৃষকদের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এখন এই চাষীরা এক সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে ও পরিবর্তিত পরিস্থিতি অনুযায়ী চাষের কাজ করছেন। জনৈক কৃষক রবিলাল হেমব্রম আনন্দের সঙ্গে তাঁর সন্তুষ্টি প্রকাশ করে জানিয়েছেন, “আমার পূর্ব পুরুষরা প্রচলিত পন্থা অনুযায়ী চাষের কাজে অনেক পরিশ্রম করতেন। কিন্তু এখন রাষ্ট্রায়ত্ত কোল ইন্ডিয়া সংস্থা আমাদের নতুন কৃষি সাজসরঞ্জাম দিয়েছে আর এগুলি ব্যবহার করে আমার মতো কৃষকরা অনেক সহজেই চাষের কাজ করতে পারছেন।”   শৌচাগার সুবিধার ক্ষেত্রে এই ব্লকের ৫,৬৬০টি পরিবারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই পরিবারগুলিতে শৌচাগারের সুবিধা গড়ে তোলা হয়েছে। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া পারিবারিক তালিকা অনুযায়ী, যাঁদের শৌচাগারের জন্য জায়গা রয়েছে সেখানে নতুন শৌচাগার গড়ে তোলা হয়েছে। দ্বৈত সেপটিক ট্যাঙ্ক সহ শৌচাগারগুলি তৈরি করা হয়েছে। এমনকি, শৌচাগার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারেও পরিবারগুলিকে সচেতন করা হয়েছে। এরকমই একজন সুবিধাভোগী মামনি বাউড়ি জানিয়েছেন, “আমার বাড়িতে ইতিমধ্যেই শৌচাগারের সুবিধা রয়েছে। সেজন্য আমাকে আর প্রাকৃতিক কাজকর্মের জন্য বাইরে যেতে হয় না। বাড়িতেই শৌচাগার থাকায় আমার অনেক সুবিধা হয়েছে।”   স্থানীয় বিদ্যালয়গুলির উন্নতি ঘটাতে পাওয়ার ব্যাক-আপ সহ একটি করে কম্পিউটার দেওয়া হয়েছে। পড়ুয়াদের কম্পিউটার চালানোর জন্য একজন প্রশিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। এমনকি, এই বিদ্যালয়গুলিতে হিন্দি, ইংরেজি ও বাংলা ভাষার বিভিন্ন গ্রন্থ নিয়ে গ্রন্থাগার গড়ে তোলা হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত কোল ইন্ডিয়া লিমিটেডের এরকম প্রশংসনীয় উদ্যোগের ফলে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর পড়ুয়ারা উপকৃত হয়েছে।   রাষ্ট্রায়ত্ত কোল ইন্ডিয়া লিমিটেডের মৌলিক সুযোগ-সুবিধার সঙ্গে যুক্ত এই প্রকল্পগুলির রূপায়ণ খাতে ২৭ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের উদ্দেশ্য পূরণে খনি এলাকায় গ্রামবাসীদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসতে এই পদক্ষেপগুলি রাষ্ট্রায়ত্ত কোল ইন্ডিয়ার সামাজিক দায়বদ্ধতাকেই প্রতিফলিত করে। 

About Post Author

Antara Tripathy

Chief Editor & CEO of IBG NEWS (09/Aug/2018-Present), Secretary of All Indian Reporter's Association,West Bengal State Committee. Earlier Vice President of IBG NEWS (01/Jan/ 2013-08/Aug/2018). She took over the charge from the Founder Editor of the Channel.
Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Advertisements

USD





LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here