“পূজার থালায় ভরা ছিল অঞ্জলী,”
ডাঃ রঘুপতি সারেঙ্গী।
একবার, এক শেঠজী’র ব্যবসাতে একটানা একটা মন্দা চলতে থাকে। তিনি বাধ্য হয়েই ঠিক করলেন, তাঁর সোনার গনেশ টিকে বিক্রি করবেন। সোনার দোকানে দাম জেনে, ওজন করে টাকাও নিয়ে নিলেন। কিন্তু দেখছেন, তখন ও তাঁর অভাব মিটছে না। এবার গনেজ জী’র বাহন টিকেও বিক্রি করতে হবে।
” চুহা কিতনে মে দো গে?”
উত্তর এলো,” ওহি সেম রেট “। শেঠজী এবার গেলেন ক্ষেপে।
” এ ক্যায়া করতে হো আপ ? গণেশজী কা জো রেট য়ে চুহা কা ভী বহি রেট ! য়ে কৈসে হো পায়েগা?”
সবিনয়ে দোকানের মালিক বললো, ” দেখিয়ে সাব, য়ে আপ কে লিয়ে গনেশ ঔর চুহা…. লেকিন, মেরে পাস সির্ফ সোনা… হি সোনা। দুশরা কুছ্ তো নেহি। রেট ক্যায়সে আলাক হোগা!”
আমাদের বিশ্বাস টি ও ঠিক এটাই। এই তো ক’টা দিন আগে মা-দুর্গা’র বিসর্জনের ঢাকে কাঠি পড়তে না পড়তেই লক্ষ্মীরূপে সেই মা এর আবার আগমন। আজ কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো। কয়েক মাস পরে আবারও সেই একই মা আসবেন বীণা হাতে সারদা’র রূপে। পুরাণ এর দুর্গা-পুজোর মন্ডপে এঁরা দেবী’র কণ্যা হলেও আসলে এঁরা সেই একই অভেদ-তত্ব। এ যেন আকাশে ভাসমান মেঘ, উত্তর গোলার্ধে জমে থাকা বরফ আর অতলান্ত সমুদ্রের বুকে নাচতে থাকা জলরাশি! বাইরে থেকে দেখতে এদের আলাদা মনে হলেও এরা সব সেই জল ই তো ! ভারতীয় অধ্যাত্মিকতার দৃষ্টি-কোন বলতে… ঠিক এটাই। নানা গুণ- রূপায় চ। বিভিন্ন রূপে সেই একই সত্ত্বার পরম প্রকাশ।
“মর-লোক এ আমরা যেমন “নানা-ভাষা, নানা-মত, নানা-পরিধান” নিয়ে মিলে-মিশে থাকি…. দেব-লোকে ও ঠিক সেভাবেই রাখি আমরা, আমাদের দিব্য চেতনাকে। বিভেদের মাঝে এখানে ও যেমন মহা-মিলন ভারত-সীমানার দিব্য-লোকে ও সেই একই ছবি। বহুত্বের মাঝে সেই একই পরম সত্য, একই চেতনা, একই অনুভূতি……সেই অদ্বৈত (Non-duality)।
কৃষ্ণ-রূপে গোপীনিদের মান- ভঞ্জন করেন যিনি, খাঁড়া-হাতে শ্মশাণ-চারিনী ও তিনি। সিংহের ওপর অধিষ্ঠিতা যিনি, প্যাঁচা’র পিঠে ও ঠিক তিনি ই। নিরাকার-রূপে যে পরম-পবিত্র তত্ব মসজিদে প্রার্থনা শোনেন, সাকার রূপে তিনিই তো পুজো নেন মন্দিরে। গুম্ফায় যিনি সুদ্ধ-সত্য- বুদ্ধ, গির্জাতে তো তিনিই মহামানব যিশু !
এমন ভগবানের পুজো করা তো তাহলে, সত্যিই কঠিন।
” তোমায় কী দিয়ে পুজিব ভগবান ?”
” ফুল দিয়ে।”
” এতো রকমের আলাদা ফুল, পাবো কোথায় ?”
” বাগানে “
” কী সেই বাগানের ঠিকানা ?”
আপনার “”মন-বাগান” এ ই তো সব ক’টি ফুল ফোটে।
” অমায়ম্ অনহঙ্কারম্ অরাগম্ অমদং তথা।
অমোহকঃ অদম্ভং চ অদ্বেষঃ অক্ষভকৌ তথা।।
অমাৎসর্যম্ অলোভং চ দশপুষ্পং বিদুর্বুধাঃ।”
ভো বুধাঃ…..হে জ্ঞানবান মানব! আপনি নিষ্ঠা-ভরে এই দশ রকমের ফুল তুলুন…..আর শ্রদ্ধাভরে আপনার পছন্দের ঠাকুরের পায়ে দিয়ে দিন। ব্যাস…. আপনার সার্থক পুজো হয়েই গেল।
Dr. Raghupati Sharangi, a renowned homeopath and humanitarian who lives for the people’s cause. He is also a member of the Editor panel of IBG NEWS. His multi-sector study and knowledge have shown lights on many fronts.