শতরূপা তোমাকে কিছু বলার ছিল সুমনের (ষষ্ঠ ভাগ) – রিনচেন লামা ও বিজলি মহাদেবের বুড়াবাবা
সুমন মুন্সী,কলকাতা
(আগে যা হয়েছে জানতে ক্লিক করুন প্রথম ভাগ , দ্বিতীয় ভাগ, তৃতীয় ভাগ, চতুর্থ ভাগ,পঞ্চম ভাগ,ষষ্ঠ ভাগ, সপ্তম ভাগ, অষ্টম ভাগ, নবম ভাগ)
“আসুন রিনচেন,প্লিজ সিট,উই অল আর ওয়েটিং ফর ইউ”, বললেন আদেন ইন্ডো টিবেটিয়ান বর্ডার পুলিশের অফিসার ওন স্পেশাল ডিউটি । তিব্বতি ভাষায় আদেন নামের অর্থ সুপুরুষ বা সুন্দর ছেলে। সত্যি স্বার্থক নাম । টকটকে ফর্সা, ধ্যানে মগ্ন সন্ন্যাসীর মতো বুদ্ধিদীপ্ত চোখ, আবেগ ঘন পুরুষ কণ্ঠ আর তেমন ব্যাক্তিত্ব ।
“আমরা ধর্মশালা থেকে স্পেশাল রিকোয়েস্ট পেয়েছি আপনাকে এসিস্ট করার জন্য। টেল মি হোয়াট উই ক্যান ডু।”, আবার বললেন আদেন। ধর্মশালা হলো টিবেটিয়ান গভর্নমেন্ট ইন একজাইল এর ক্যাপিটাল, দালাই লামার হেড কোয়ার্টার ।
“গুড আফটারনুন, সরি ফর বিং থ্রী আওয়ার্স লেট্। একচুয়ালী ফ্লাইট ল্যান্ডেড লেট এন্ড মিসড টি কানেকটিং বাস ।”, লামা ক্ষমা চাইলেন বিনীত ভাবে।
“দিস প্লেস ইস ভেরি ইন্টারেষ্টিং এন্ড হোলি। ন্যাচারাল বিউটি উইথ গ্রেট স্পিরিচুয়াল ভাইবস”, আবার বললেন রিনচেন ।
“ইয়েস ইন ডিড”, বললেন আদেন ।
“ক্যান ইউ টেল মি এবাউট দিস এরিয়া ইন ডিটেইলস”, প্রশ্ন করে রিনচেন লামা।
“বিজলি মহাদেব ভারতের হিমাচল প্রদেশের অন্যতম পবিত্র মন্দির। এটি কুলু উপত্যকায় প্রায় 2,460 মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। বিজলি মহাদেব ভারতের প্রাচীন মন্দিরগুলির মধ্যে একটি এবং ভগবান শিবকে (মহাদেব) নিবেদিত। বিয়াস নদীর ওপারে কুল্লু থেকে 14 কিমি দূরে অবস্থিত, এটি 3 কিমি একটি ট্রেক করে আস্তে হয়।”, বললেন আদেন ।
“মন্দির থেকে কুলু এবং পার্বতী উপত্যকার একটি মনোরম দৃশ্য দেখা যায়। বিজলী মহাদেব মন্দিরের ৬০ফুট উঁচু কাঠের মিনার রোদে রুপোর সূঁচের মতো চকচক করে। ডিউরিং সান রাইজ দেখার মতো এক দৃশ্য ।”,বললেন আদেন ।
বিজলী মহাদেবের মন্দির মূলত হিমাচলের স্থানীয় স্থাপত্য। বজ্রপাতের ফলে প্রতি বার বছরে একবার এই মন্দিরের শিব লিঙ্গ টুকরো টুকরো হয়ে যায় । সবাই বলে ঈশ্বরের আশীর্বাদ। বজ্রপাতের ঘটনা 12 বছরের মধ্যে আর ঘটে না। পুরোহিত শিবলিঙ্গর টুকরো কে মাখন দিয়ে প্রলেপ দেন এবং অর্চনা করে মন্দির বন্ধ করে দেন । পরদিন লিঙ্গ আবার জোড়া লেগে যায় নিজের থেকে ।”, বললেন আদেন ।
“ভেরি ইন্টারেষ্টিং ইন ডিড। হোয়াট কুড বি দা লজিক ওর সায়েন্স বিহাইন্ড।”, বললেন রিনচেন লামা ।
“প্রেয়ার ইজ দা মোস্ট পাওয়ারফুল ফোর্স দ্যাট ক্যান ডু এনি থিং”, বললেন আদেন ।
“ইয়েস ,ট্র্রু”, রিনচেন সম্মতি জানায় ।
“আই ওয়ান্ট তো মিট পণ্ডিত সাপ্রু জি”, বললেন রিনচেন ।
“ইউ মিন টি বুড়াবাবা দ্যাটস হোয়াট অল ভিলেজেরস কল হিম উইথ রেস্পেক্ট। ব্যাট হি ইজ ভেরি সিক, ডু নট মিট আউট সাইডার্স ।”বললেন আদেন ।
“প্লিজ সি, আই মাস্ট মিট ইটস আর্জেন্ট ,ধর্মশালা অফিস রেকুয়েস্টেড টু ডিসকাস ভেরি ইম্পরট্যান্ট সিক্রেট ইস্যু অফ ইন্টারন্যাশনাল ইম্পোর্ট্যান্স ।”বললেন রিনচেন লামা ।
“লেট্ মি ট্রাই হিস্ গ্রান্ড সন। হি নিড এ ক্লেয়ারেন্স ফর পাসপোর্ট। হি উইল কাম এনি টাইম নাউ, অনলি হি ক্যান,”বললেন আদেন ।
ধীরে ধীরে অফিসের বাইরে এসে দাঁড়ায় রিনচেন । বাতাসে বেশ ঠান্ডা আর কয়েক দিন পর থেকে বরফ পরা জোরদার শুরু হয়ে যাবে । নিচে বয়ে চলেছে একদিকে পার্বতী নদী অন্য দিকে বিয়াস বা বিপাশা । কুলু উপত্যকা এক মায়াবী দেবভূমি ।
পাহাড়ের এই সুন্দর শান্ত রূপ রিনচেনের খুব প্রিয়, তাই পাহাড়ের বাইরে সে যেতে চায় না। কর্ণাটকের নিস্বর্গ ধামের কাছে মোনাস্ট্রিতে যাওয়ার কথা সে সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করে, হিস্ হোলিনেসর অফিসের কাছে ।
দূরে পড়ন্ত সূর্যের আলোতে মায়াবী লাগছে দূরের ধৌলাধার হিমালয় রেঞ্জ । এখানে সারাজীবন থাকতে পারে সে ।
“স্যার কাইন্ডলি কাম দা বয় হাজ্ কাম”,বললেন আদেন ।
ধীরে ধীরে ফেরে রিনচেন, “পড়ন্ত আলোতে হিমালয় কে পিছনে রেখে তাঁকে যেন মূর্ত তথাগত বুদ্ধের আর এক অবতার মনে হচ্ছে”, বললেন আদেন ।
স্মিত হাসেন রিনচেন কথা শুনে।
অফিসে ফিরে দেখে একটি ১৮-১৯ বছরের ছেলে দাঁড়িয়ে, নাম শিবা।
“শিবা উইল টেক ইউ টু বুড়া বাবা”,বললেন আদেন ।
“লেটস গো, নো টাইম টু ওয়েস্ট, থাঙ্কস এ লট অফিসার আদেন “, বললেন রিনচেন ।
শিবার পিছন পিছন পাকদন্ডী ধরে চলতে থাকেন রিনচেন ।
কথায় কথায় জানা যায় বুড়াবাবা আর হাঁটে চলতে পারেন না, কিন্তু কথা বলেন ।
মিনিট কুড়ি উৎরাই এরপর পাঁচ মিনিট চড়াই পেরিয়ে এলো ওদের গ্রাম , পাঁচ মৌরির কাছে গ্রামটি । সুন্দর পাহাড়ি গ্রাম, বেশ সমৃদ্ধ , স্কুল, ডাকঘর, হেলথ সেন্টার কাছেই ।
ঘরে যেতে সকলে প্রণাম করলো স্বাভাবিক ভারতীয় সংস্কার গেরুয়া পরিহিত সন্ন্যাসী এখনো সম্মান পায় ।
বুড়া বাবার ঘরে ঢুকে তাঁকে নমস্কার করলো রিনচেন , তিনিও জানালাম প্রণাম ।
এবার রিনচেন প্রাথমিক কুশল জিজ্ঞাসা করেই প্রশ্ন শুরু করলেন ।
১৯৫৯ এ দালাই লামা যখন চলে আসেন তখন এক লামা পথভুলে কালাপানি লীপুলেক অঞ্চলে এ হারিয়ে যান বুড়াবাবা তাকে কৈলাশ থেকে ফিরতি পথে দেখতে পান খুবই অসুস্থ, তারপর তিনি মারা যান । তিনি বুড়বাবা কে কিছু জিনিস দিয়েছিলেন, দালাই লামা কে দেবার জন্য। কি সেই জিনিস আর কোথায় গেলো, সেই জিনিস ।
বুড়া বাবা চমকে উঠে বললেন,”অপক ক্যাইসে পাতা, হুম তো কিসি ক নাহি বলে”।
” হুম ক সব পাতা জি”, হেসে কিন্তু দৃঢ় কণ্ঠে বললেন রিনচেন লামা ।
“এক বাকসা থা জিসমে কুচ কাপড়ে, দো সোনে কে সিক্কা, ওর এক ভূর্জপত্র কে পুঁথি থা” বললেন বুড়া বাবা ।
“সোনে কে সিক্কা দোস্ত জো সাথ থা যে লিয়ে, মেইনে ও পুঁথি আপ্নে পাস্ রাখ দিয়ে থে ওস্পার শিউজি কে বড়ি সুন্দর সুন্দর ফটো থা, হাত সে বানা হুয়া।” বললেন বুড়া বাবা ।
“লেকিন ও চীজ ভি তো লিপুথুরা কে পাস্ দো বুদ্ধিস্ট লোগো নে লেকে লিপুথুরা মনাস্ট্রি কো দে দিয়ে থে। কাঞ্চন দর্জি কে জো মিঠাই কে দুকান থা উস্কে পিছে থা ওহ মনাস্ট্রি। বহুত বাড়িয়ে পেড়হ খিলায়ে থে কাঞ্চন দর্জি ।”, বলে হাপাতে থাকলেন বুড়াবাবা ।
“মোনাস্ট্রিকে সাধুবাবা বলে থা কিসিকো না বলনে কে লিয়ে, শরীফ আগর কোই ধর্মশালা সে আয়ে তো বল না। লেকিন উস্ক ভি তো আচানক মত হো গায়ে উসি দিন। হুম ভি ডারকে মারে ভাগ আয়ে।পুলিশ উলিস কে চাক্কার মাইন্ নাহি পার না। ভুল ভি গায়ে থে, পিছলে হাফতে এক বলা কি পুলিশ হ্যায় দিল্লি সে আয়া। পুছে থে লেকিন নাহি বলে । আপ ধর্মশালা সে আয়ে ইসলিয়ে বলে। ,” এবার বুড়া বাবার কাশি হচ্ছে ।
একটু জল খেয়ে বললো বাবুজী যে চিজ ধুন্দ রাহে হয় ও ভগবান কে কৃপা সে হয় মিলেগা, নাহি তো নাহি। শঙ্কর জি কে গুপ্ত কিতাব হ্যায় ও কিতাব । হার কিসি ক রাজ নাহি আয়েগা”।, বলে নামাস্তে দেখালো রিনচেন কে । এর পরেও কিছু বলেছিলো কিন্তু শিবা সেটা দরজার আড়াল থেকে বুঝতে পারে নি ।
যা জানার ছিল তা জানা হয়ে গেছে সুতরাং এবার সেও নমস্কার করে বেরিয়ে আসে ঘর থেকে ।
“কেয়া ব্যাট হয় বাবুজি পিছলে হাপাতে দো আদমি আয়া থে দিল্লি সে, বলে কি পালিশ হয়। আজ আপ সাধু আদমি আয়ে কেয়া বাত জি “, প্রশ্ন করে শিবা ।
রিনচেন হেসে বলে ” আপকে শিব জি ক লেকে পিকচার বানেগা ইজ লিয়ে”।
এবার একই পথ চিনে এসে ওঠে তার গেস্ট হাউস ফেরার বাস স্ট্যান্ডে । বাস স্ট্যান্ড থানার কাছেই ।
বাসস্ট্যান্ডের কাছে দেখে দোকান থেকে মাখন কিনছে আদেন । রিনচেন কে ডেকে বললেন কোথায় যাবেন পথে হলে ওনার বইকে পৌঁছে দেবেন ।
রিনচেন বললেন “আমার গেস্ট হাউস রিভারসাইড রুদ্র’স হাট “।
“ওকে ইটস ওন ময় ওয়ে আজ শশুর বাড়ি যাবো ওখানেই আমার ইন ল রা থাকেন, উঠে আসুন”, বললেন আদেন ।
রিনচেন উঠে বসলেন বাইকে ।
(ক্রমশ)
*** কাল্পনিক গল্প বাস্তবের চরিত্র ***