গর্ভধারিণী
সুমন মুন্সী,কলকাতা
দশ মাসের বেদনার শেষে, আমি এসেছিলাম কেঁদে,
তখন তুমি হেসেছিলে বিজয়িনীর হাসি সব শেষে।
অনেক কষ্টে, অনেক আদরে বড় করে তোলা,
কোনোদিন চাওনি কিছু, মা ডাক ছাড়া ।
তোমার সব কিছুই বড় সেকেলে,অচল ছিল মা ,
তবুও তুমিই ছিলে অচলা ।
আমি একমুঠো ভাত কম খেলে,তোমার পেট থেকে যেত খালি,
তুমি কি খেলে কখনও জিজ্ঞাসা করেছি কি আমি ?
শত অপরাধকে করেছো ক্ষমা, হাসিমুখে সব সয়ে,
একবার পুজোয় জামা দাওনি বলে,করেছি কত গঞ্জনা।
তোমার ছেঁড়া কাপড়ে পুজো আর আমার হয়েছে দামি জামা,
ফিরে দেখি যত অতীতের পানে, শুধুই যে হতাশা ।
আজ আবার যখন পুজো আসে, সবাই হাসে আর খেলে,
আমার অপরাধবোধ আমাকে অন্তরে হানে বারেবারে।
জীবনের নিয়মে জীবন চলে, জীবিকার খোঁজে জীবন,
মাতৃ পুজোর আয়োজনে শুধু ফাঁকি পরে থাকে, জীবন ।
একবার নয় বারবার চাই ফিরে পেতে তোমাকে,
চিন্ময়ী মাকে ছেড়ে, তোমাকেই ধরি আঁকড়ে ।
স্নেহের পরশ হারিয়ে গেলে, বুঝি শাসনের মানে,
শাসন তাই আজ ভালো লাগে, সম্পর্কের শোষণের মাঝে ।
তারার দেশে কোথায় আছো খঁজি নাতো আর তোমায়,
মনের মাঝে রয়ে গেছে মা বুঝিয়ে দেয় সময় ।
আজকে সবাই পুজোয় মেতে, কেউ খোঁজে না আমাকে ।
বোধনের দিনে তাই বলি মা, আবার এসো ফিরে,
যত অবহেলা করেছি, ক্ষমা কারো অন্তরে ।
ছেলে আমি ভালো নই, নই মানুষের গুনধারী,
তবুও তুমি বুকে টেনে নেবে, একথা নিশ্চিত জানি ।
***সকল মায়েদের আর তাদের সন্তানদের আমার প্রণাম । আমার অনুজ প্রতিম অনির্বান চক্রবর্তী গতকাল মা কে হারিয়েছেন, আশ্চর্য সমাপতন আমার মাকেও আমি হারিয়েছি একই দিনে, ২০১৫ সালে । তাই আমাদের মায়েদের জন্য আমার শ্রদ্ধা রইলো । ***