রাজনীতির ফিনিক্স পাখি শেখ হাসিনাকেই জঞ্জাল সাফ করতে হবে।
ড. মশিউর মালেক,ঢাকা :
শেখ হাসিনা একজন মেধাবী, পরিশ্রমী এবং ভিশনারী রাষ্ট্রনায়কের নাম। তিনি বারবার আগুনে পুড়ে ছাই ভষ্ম থেকে পূনর্জন্ম লাভ করে করে রাজনীতির আকাশে দাপিয়ে বেড়ানো এক ফিনিক্স পাখি। তিনি প্রথম পুড়েছেন ১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে বন্দীদশায় সন্তান জন্ম দেয়ার কালে। যখন জানতেন না ভবিষ্যৎ কী? জানতেন না যুদ্ধ কবে শেষ হবে বা সে পর্যন্ত স্বামী সন্তান নিয়ে জীবিত থাকবেন কি না? পিতাকে আর কখনো দেখতে পাবেন কি না? পরিবারের কারো সাথে মিলিত হতে পারবেন কি না? দ্বিতীয়বার পুড়েছেন ১৯৭৫ এ পিতা সহ পরিবার ও ঘনিষ্ঠ স্বজন সকলকে হারিয়ে নির্বাসিত জীবন কাটানো কাল থেকে শুরু করে।
এর পর ১৯৮১’র ফেব্রুয়ারিতে জোটেল ইডেন এর সম্মেলনে আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে ১৭ মে দেশে ফিরে আসা পর্যন্ত। এ ছিল তার পূনর্জন্ম।ষড়যন্ত্রের আগুনে পোড়া ছাই ভষ্ম থেকে এ জন্ম তাঁকে রজনীতির ফিনিক্স পাখি হিসেবে বাংলাদেশের রাজনীতির আকাশে দাপিয়ে উড়তে থাকেন। উড়তে উড়তে তিনি দলের সভাপতি হিসেবে দলকে সংগঠিত করতে থাকেন পাশাপাশি জনগনের ভোট ও ভাতের লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন। দীর্ঘ ২১ বছরের এ লড়াইয়ে বারবার তাঁর ব্যক্তি জীবনের উপর হামলা এসেছে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন বারংবার।
এর প্রতিবারই তিনি আগুনে পুড়ে পোড়া ছাইভষ্ম থেকে ফিনিক্স পাখির মত পূনর্জন্ম লাভ করে নব উদ্যমে রাজনীতির আকাশ দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। তিনি তাঁর একুশ বছরের লড়াইয়ে জাতির পিতার এবং তাঁর পরিবার সহ স্বজনদের হত্যার বিচারের দাবীতে জনমত সুসংগঠিত এবং সুসংহত করেছেন।একুশ বছরের লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে ১৯৯৬ সনে ক্ষমতায় এসে জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং গণদাবীর প্রতি সম্মান রেখে জাতির পিতা সহ তাঁর পরিবারের এবং স্বজনদের হত্যার বিচার করেছেন।কোনরকম বিতর্ক বা দুর্ণাম ছাড়াই পাঁচ বছর সফলভাবে দেশ শাসন করে অতীত সব রেকর্ড ভেঙে সংবিধানে উল্লিখিত মেয়াদের একদিনও অতিরিক্ত ক্ষমতায় না থেকে সংবিধান সম্মত ভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। যা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল। বলা হয়ে থাকে ১৯৯৬- ২০০১ আমলের শেখ হাসিনার শাসনকাল বাংলাদেশের ইতিহাসের স্বর্ণযুগ।
২০০১ এর সাহাবুদ্দিন- লতিফ- সাঈদ ত্রি-চক্রিয় ষড়যন্ত্রের নির্বাচন এবং নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতি অগ্নিপ্রজ্জ্বলিত ধ্বংসস্তুপে পরিণত করে তাঁকে এবং তাঁর দল আওয়ামীলীগকে। সে ধ্বংসস্তুপের ছাইভষ্ম থেকে আবার ফিনিক্স পাখির পূনর্জন্ম নেন শেখ হাসিনা দেশ মাতৃকার কণ্যা সাহসিকা হিসেবে। নতুন করে সাহস আর উদ্যম নিয়ে ধ্বংসস্তুপ থেকে টেনে বের করেন নিজ দল আওয়ামীলীগকে এবং সাথে টানেন মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী সব দলকে। শুরু করেন আবার রাজপথের লড়াই।মুক্তিযুদ্ধের চেতনা,স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের পূনরুদ্ধারের লড়াই। এ লড়াই হয়ে ওঠে কঠিন থেকে কঠিনতর। মাথার উপরে স্বাধীনতা বিরোধী জামাত পুষ্ট মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি পাকিস্তানী ভাবধারায় লালিত সরকারের প্রশাসনিক নির্যাতনের যাঁতাকল আর মাঠে জেএমবি, বাংলা ভাই,হরকাতুল জেহাদ সহ নানা জঙ্গীগোষ্ঠি হায়নার দন্ত নখরের থাবা। এ অবস্থায় দণ্ডপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধুর খুনি এবং স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার, আলবদর, আলশামস এবং শান্তিকমিটির সদস্যদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তিকে নির্মূলের সুপরিকল্পিত সন্ত্রাস সহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বেড়াজালে আবৃত থেকেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবী নিয়ে রাজনীতির আকাশ দাপিয়ে বেড়াতে থাকেন রাজনীতির ফিনিক্স পাখি শেখ হাসিনা।
তাঁর দাপটে প্রমাদ গোনে ষড়যন্ত্রী অক্ষশক্তি। অতএব তাঁকে সহ আওয়ামীলীগকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা এঁটে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামীলীগ অফিসের সন্মুখে সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশে ২০০৪ সনের ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা চালনা হয়। সৃষ্টিকর্তার অপার মহিমায় শেখ হাসিনা সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বেঁচে যান আইভি রহমান সহ ২৪ জন নেতাকর্মী এবং দেহরক্ষী মাহবুব এর জীবনের বিনিময় সহ কয়েক শত নেতা কর্মীর চিরতরে আহত ও পঙ্গুত্বের বিনিময়ে। সে দিনের সেই ধ্বংসস্তুপের মধ্য থেকে ভয়লেশ মুক্ত হয়ে নিজের জীবনকে অতিরিক্ত জীবন ভেবে নিজ_কে পূনর্জন্ম দেন রাজনীতির ফিনিক্স শেখ হাসিনা।সকল দ্বিধা ভয় মুক্ত শেখ হাসিনা এবার হয়ে ওঠেন অপ্রতিরোধ্য, আর কর্মীদেরও গড়ে তোলেন সে ভাবেই।তাইতো ২০০৬- ২০০৭ এ দুষ্ট চক্রের ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে লগি বৈঠার মত কর্মসূচি দেন।
২০০৭ এর এক এহারোতে এবার মাঠে নামে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রীরা।তারা তাদের মদদপুষ্ট সেনাসমর্থনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করায়।মানুষ আপাত শান্ত হলেও যখন তাদের শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে নির্বাসনে পাঠানোর ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা উন্মোচিত হয় তখন মানুষ ফুঁসে ওঠে। আন্তর্জাতিক জনমত গড়ে ওঠে শেখ হাসিনার পক্ষে। শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত আসতে দিতে বাধ্য হয়। নির্বাসনে পাঠানোর পরিকল্পনা ভেস্তে গেলে দেশের ভেতরে মানুষের মন থেকে নির্বাসন দেয়ার পরিকল্পনা আঁটে ষড়যন্ত্রীরা। তারা নানা লোক দিয়ে মিথ্যা নাটক ও কল্প কাহিনী সাজিয়ে শেখ হাসিনাকে দূর্ণীতিবাজ ও চাঁদাবাজ প্রমাণ করার উদ্দেশ্য নিয়ে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে গ্রেপ্তার করে।রাতারাতি অভিযোগ পত্র দাখিল করিয়ে বিচার শুরু করে দোষি প্রমাণ করে দন্ড দেয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে।নিজেদের নিরপেক্ষ প্রমাণ করার জন্য ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলা রটিয়ে দিয়ে লোক দেখানো ভাবে গ্রেপ্তার করে ষড়যন্ত্রীদের মক্ষীরাণী খালেদা জিয়াকে।কিন্তু খালেদা জিয়ার মামলায় কোন অগ্রগতি হয় না।মূলতঃ ষড়যন্ত্রীদের লক্ষ্য ছিল মাইনাস টু নয় মাইনাস ওয়ান অর্থাৎ মাইনাস শেখ হাসিনা।
মিথ্যা মামলায় যদি শেখ হাসিনা আইনী সুবিধা পেয়ে যায় তাই আওয়ামীলীগের খ্যাতিমান আইনজীবীদের সেনাছাউনিতে চায়ের দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গিয়ে তাদেরকেও জেলে ভরার হুমকি দিয়ে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলা লড়া থেকে বিরত রাখেন। এর পরও ভয় কাটে না দুষ্ট চক্রের। তাই তারা এবার ছড়ালো ‘সস্কার তত্ত্ব’। কিন্তু জনগণের ভালোবাসায় দেশে বিদেশে শেখ হাসিনার মুক্তির আন্দোলনের ফলে গড়ে ওঠা আন্তর্জাতিক জনমতের কাছে হার মানতে বাধ্য হন দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রী চক্র। মুক্তি পান শেখ হাসিনা।তিনি মুক্তি পান শুধুমাত্র আওয়ামীলীগের নেতা হিসেবে নয় মুক্তি পান স্বাধীনতা প্রিয় এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল মুক্তিকামী মানুষের এবং দল মতের একচ্ছত্র ভরসার স্থল ও ঐক্যের প্রতীক হয়ে। যেমন তাঁর পিতা শেখ মুজিবুর রহমান আগরতলা মামলা থেকে মুক্ত হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু হয়ে জাতির একমাত্র ভরসার স্থল ও স্বাধীনতা সংগ্রামের একচ্ছত্র নেতা হিসেবে।যে ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু জনগণের নিরংকুশ ম্যান্ডেন্ট নিয়ে শাসনতান্ত্রিক ভাবে জনগণের নেতায় পরিণত হয়ে হন মুকুটহীন সম্রাট এ।যার ফলে তিনি সমর্থ হন একটি নিরস্ত্র জাতিকে স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে উদবুদ্ধ করতে। আর সে জাতি তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁরই নেতৃত্বের নামে যুদ্ধ জয় করে শত্রু মুক্ত বিজয়ী দেশ গড়তে সমর্থ হয়। তিনি মুক্ত হয়ে দেশে ফিরে জনগণকে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন একটি জাতিরাষ্ট্র।
ঠিক তেমনিভাবেই রাজনীতির ফিনিক্স পাখি শেখ হাসিনা কারামুক্ত হয়ে জনগণের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে নির্বাচনে নিরংকুশ বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে অপ্রতিরোধ্য রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হন। তাই ২০০৯ এ ক্ষমতা গ্রহণ করেই তিনি জনগণের কাছে দেয়া নির্বাচনী ওয়াদার বাস্তবায়নে ব্রতী হন।প্রান্তিক মানুষের জন্য প্রণয়ন করেন একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প।ঘরে ঘরে চাকরি দেয়ার ওয়াদা পূরণে দরিদ্রতম মঙ্গা পিড়ীত রংপুর এবং দরিদ্রতম বরগুনা এ দুই জেলাকে বেছে নেন। জনগণের আশার প্রতিফলন ঘটাতে জাতির পিতার হত্যার দায়ে দন্ডিত আসামিদের দন্ড কার্যকর করেন।শুরু করেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাজ।তাদের বিচারে দন্ডপ্রাপ্তদের দন্ড কার্যকর করেন।যে বিচার এখনও চলমান। তিনি জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে এগিয়ে চলতে থাকেন। পাশাপেশি দেশের উন্নয়নের কাজেও হাত দেন। পদ্মা সেতুর মত বৃহদ প্রকল্প সহ ঢাকা শহরের জানজট নিরসনকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ শুরু করেন।
শেখ হাসিনার এই দৃঢ়তায় দুষ্ট চক্র প্রমাদ গোনে,ভয় পেয়ে যায়।আবার তারা মাঠে নামে। ষড়যন্ত্রের ডালপালা ছড়াতে থাকে। স্বাধীনতা বিরোধী চক্র, বঙ্গবন্ধুর খুনের দন্ডিত পলাতক আসামী এবং বিএনপির সম্মিলিত চক্র আন্তর্জাতিক ভাবে লবিষ্ট নিয়োগ করে দেশ বিরোধী ও হাসিনা বিরোধী প্রচারণা চালাতে থাকে। ফলে জাতিসংঘের মহাসচিব সহ আন্তর্জাতিক শক্তির অনেকে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসী না দিতে নসিহত করেন। বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর ঠিকাদার নিয়োগের আগেই দূর্ণীতি হয়েছে বলে বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত নিয়ে যায়, উদ্দেশ্য শেখ হাসিনাকে বিপাকে ফেলা। শেখ হাসিনা কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসীর রায় কার্যকর করতে থাকেন। পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থে নির্মাণের সাহসী সিদ্ধান্ত নেন। একের পর এক মেগা প্রকল্প গ্রহণ করতে থাকেন।
বিরোধী চক্র আন্তর্জাতিক ভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে আভ্যন্তরীণ ভাবে শেখ হাসিনাকে পরাস্ত করতে ষড়যন্ত্র করে দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের আশায়। তারা মাঠে নামায় হেফাজতি মৌলিবাদীদের।পরিকল্পনা করে ২০১৩ এর ৩ মে বিএনপির সমাবেশ করে সারা দেশ থেকে আসা নেতা কর্মীদের ঢাকায় থাকার নির্দেশ দিয়ে ৫ মে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলে। ৫ মে হেফাজতিরা এমন কতকগুলো অসুস্থ ১৩ দফা দাবীতে সারা দেশ থেকে মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষকদের ঢাকায় নিয়ে এসে সমগ্র ঢাকা শহরে নিজেরা নিজেদের আক্রমণ করিয়ে ও জ্বালাময়ী, অশ্লীল, উত্তেজনাকর বক্তব্য দিয়ে এক অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করে।তারা এমনকি কোরান শরিফও পুড়িয়ে সাধারণ নিরীহ ছাত্র শিক্ষকদের উত্তেজিত করে ঢাকায় অবস্থান করার ঘোষণা দেয়।কৌশল ছিল পরেরদিন ঢাকায় এবং ঢাকার আশপাশে আগে থেকে অপেক্ষা করা বিএনপি সহ বিশ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা পরের দিন সমাবেশে যোগ দেবে। বিশ দলীয় জোটের একাধিক নেতা সেদিন হেফাজতি মঞ্চে বক্তব্য পর্যন্ত রাখেন।তাদের পরিকল্পনা ছিল পরদিন জনস্রোত নিয়ে সচিবালয় আক্রমণ করে সচিবালয়ের দেয়াল ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে সচিবালয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ক্ষমতা দখলের ঘোষণা দেবে।মামুনুল হকের জবানবন্দীতে আজ তাদের এ পরিকল্পনা প্রমাণিত।
শেখ হাসিনার দৃঢ়তা এবং সেনা ও পুলিশ প্রশাসনের কৌশলী ভূমিকায় কোন রক্তপাত ছাড়াই সে সংকট কাটানো গেছে। ষড়যন্ত্রী চক্র এর পরে শুরু করে সমগ্র দেশে অরাজকতা।তারা অসাংবিধানিক অনির্বাচিত সরকারের দাবির ধুয়া তুলে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের উপরে হামলা চালানো শুরু করে।গণপরিবহনে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে অগ্নিদগ্ধ করে সাধারণ জনগণ হত্যা করা শুরু করে।তারা নির্বাচন বয়কট করে নির্বাচনী কেন্দ্র, সরকারী অফিস স্কুল প্রভৃতি জ্বালাতে থাকে। তখন অনেক নেতা বা বিদেশী চক্রের অনেক নসিহত উপেক্ষা করে একা ফিনিক্স শেখ হাসিনা দৃঢ় ভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করেন।
অনেকেরই ধারণা ছিল অল্প দিনের মধ্যেই সরকারের পতন ঘটবে।কিন্তু শেখ হাসিনা ততদিনে নিজের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা,মেধা,প্রজ্ঞা ও দুরদৃষ্টি দিয়ে বুঝে গেলেন দেশের উন্নয়ন করতে হলে, দেশের জনগণের সত্যিকারের অর্থনৈতিক মুক্তি আনতে হলে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে হলে স্বাধীনতার শত্রুদের রাজনৈতিক ভাবে নিশ্চিহ্ন করতে হবে।এদের ভবিষ্যতে ক্ষমতায় আসার পথ রোধ করতে হবে।
তাই তিনি দৃঢ়ভাবে উন্নয়নে মনোনিবেশ করলেন,মনোনিবেশ করলেন জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে।ক্ষমতায় টিকে থাকতে মৌলবাদীদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত কম জঙ্গীভাবা হেফাজতিদের সাথে আপোষ করে একটা অংশকে দৃশ্যমান হাত করলেন।শেখ হাসিনা সকলকে অবাক করে দিয়ে টানা দ্বিতীয় মেয়াদের এক বছর পার করায় পতন না ঘটা পর্যন্ত ঘরে না ফেরার ঘোষণা দিয়ে অগ্নিসন্ত্রাসের জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন শুরু করলো জামাত – বিএনপি চক্র। শেখ হাসিনার দৃঢ়তা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্তির ঐক্যনদ্ধ প্রতিরোধের মুখে বিএনপি নেতৃ ব্যর্থতার গ্লানি মাথায় নিয়ে আন্দোলন ছেড়ে ঘরে ফিরে গেলেন।জনগণ স্বস্তি পেল।শেখ হাসিনা উন্নয়নের মেগা মেগা প্রকল্প নিয়ে এগোতে লাগলেন।
বিরোধী চক্র বুঝে গেলেন শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে আরো ২/১ মেয়াদে নামানো সম্ভব নয়।অতএব কৌশল এবার আওয়ামীলীগের ঘরে ঢুকেই আওয়ামীলীগকে পরাজিত করতে হবে।রাতারাতি বিভিন্ন কৌশলে জামাত বিএনপির কর্মীরা আওয়ামীলীগের কর্মী বনে যেতে শুরু করলো।ক্ষমতার হালুয়া রুটির ভাগাভাগীতে লিপ্ত বিবদমান স্থানীয় গ্রুপুগুলো নিজেদের গ্রুপ ভারী করার জন্য তাদের কাছে টেনে নিলো।এ পর্যায়ে দীর্ঘদিনের পুরোনো ত্যাগী নেতা কর্মীরা অসহায় হয়ে পড়তে থাকে।ক্রমে তাদেরকে দলে অপ্রয়োজনীয় করে ফেলা হলো।
তারা পাদপ্রদীপের আড়ালে চলে যেতে থাকে।মাঠের মিয়ন্ত্রণ চলে যায় হাইব্রীড, নব্য সুবিধাবাদীদের দখলে। এরাই ছড়াতে থাকে ‘সুষ্ঠ নির্বাচন হলে আওয়ামীলীগ জিতবে না ‘। গোয়েন্দাদের পক্ষ থেকেও সে রকম প্রতিবেদন দেয়া হয়। শেখ হাসিনা চিন্তায় পড়ে যান। স্থানীয় নতুন, পুরাতন, আর হাইব্রীড দন্ধ চলমান অবস্থায় স্থানীয় সরকারের নির্বাচন হলে মাঠ চলে যাবে স্বাধীনতা বিরোধী এবং তাদের আশ্রয় প্রশ্রয়দাতা জামাত, বিএনপি,অগ্নিসন্ত্রাসী, মৌলবাদী জঙ্গীদের হাতে। সমাধান কী? তৃণমূল্যের ঐক্যই একমাত্র সমাধান।কোন উপায় খুঁজে পাওয়া যায় না।উপায় একটাই- স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও দলীয় প্রতীক বরাদ্দ। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলে সকলে ঐক্যবদ্ধ হতে বাধ্য। দলীয় প্রতীকের বিপক্ষে কেউ যাবে না।
যে যাবে তাকে বহিষ্কার করা হবে।যা ভাবা তাই কাজ।আইন সংশোধন হলো।দলীয় প্রতীকের স্থানীয় নির্বাচন ঘোষণা করা হলো।হাইব্রীডরা মহা খুশী। খুশি এমপি এবং জেলা নেতারা। শোনা যায় দশ লাখ থেকে শুরু করে কোটি টাকার উপরে লেনদেনের মাধ্যমে মনোনয়ন মিলেছে বেশীর ভাগ প্রার্থীর।সে প্রার্থী হাইব্রীড বা ত্যাগী যে ই হোক না কেন। কোন কোন নেতা নাকি একজনের কাছ থেকে বিশ ত্রিশ নিয়ে চল্লিশ পঞ্চাশে অন্যজনকে মনোনয়ন দিয়েছেন।এসব কথা আমি বিশ্বাস করতে চাই না,তবে হাওয়ায় ভেসে বেড়ায়।আমাদের দেশের প্রবাদ ‘যা কিছু রটে তার কিছু না কিছু বটে’। সে কিছুটা যদি বটেই হয় তবে তা রাজনীতির শুদ্ধতার জন্য অশনি সংকেত। এসব কথা মাননীয় নেত্রী আমার শ্রদ্ধেয় আপা শেখ হাসিনার কানে যে যায়নি তা নয়।কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধীদের মাঠ পর্যায়ে নির্মূলের অমোঘ অস্ত্র স্থানীয় নির্বাচনে তাদের নিশ্চিহ্ন করার কৌশল তিনি ছাড়তে চাচ্ছেন না।
ফলে আওয়ামীলীগের জেলা উপজেলার কমিটি গঠনে পদের মনোনয়ন বা নির্বাচনেও শুরু হয় পদ বানিজ্য। কারণ জেলা উপজেলার নেতারাই স্থানীয় নির্বাচনের প্রার্থীদের সুপারিশ করে কেন্দ্রে পাঠান।অতএব কোটি টাকা খরচ করেও জেলা উপজেলার সভাপতি বা সেক্রেটারি হতে পারলে স্থানীয় নির্বাচনে মনোনয়ন সুপারিশ করে অনেক বেশী আয় করা যায়। ক্ষমতায় থাকার অন্যান্য ভাগ বাটোয়ারার আয় তো আছেই। ফলে রাজনীতি আজ আর মাঠ পর্যায়ে দলীয় কর্মকান্ডে নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ, সময় ও শ্রম দেয়া বা মেধার উপরে নির্ভরশীল নেই।এর ফলে অন্ততঃ ক্ষমতাসীন আওয়ামী রাজনীতিতে দলের অভ্যন্তরেও সৃষ্টি হয়েছে মহা জঞ্জাল।
আসে ২০১৮ এর জাতীয় নির্বাচন।আবারো সেই ষড়যন্ত্র।আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরের হাইব্রীডরাই রব ওঠায় হাইব্রিডদের কারণে আওয়ামীলীগ বিতর্কিত হচ্ছে, মানুষ অতীষ্ট হচ্ছে।চায়ের দোকানে,আডডায়,গণ পরিবহন সামাজিক অনুষ্ঠানে সর্বত্র একই কথা সুশজঠ নির্বাচন হলে আওয়ামীলীগের ভরাডুবি হবে। গোয়েন্দাদের রিপোর্টেও তা ই বলা ।প্রধানমন্ত্রী প্রাণের নেত্রী চিন্তায় পড়ে গেলেন।ঘোষণা দিলেন আওয়ামীলীগই জিতবে।বিরোধী চক্র নানা ষড়যন্ত্র শুরু করলো, মান্না – কামাল – জাফরউল্লাহ গংরা মাঠে নামলো।একটা সাজ সাজ রব শুরু হলো।উদ্দেশ্য শেখ জাসিনাকে পাতানো খেলার ফাঁদে ফেলা।কিন্তু শেখ হাসিনা দৃঢ়।তিনি বললেন জিতে আসো। অতএব সুশীলদের চেষ্টা ব্যর্থ।এবার ষড়যন্ত্রে জড়ানো হলো প্রশাসনকে।
২০১৩ থেকে ২০১৫ সময়ে পুলিশের উপরে হামলার কারণে পুলিশ এমনিতেই বিরোধীদের উপরে ছিল রুষ্ট।তার উপরে নির্বাচনকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্র।হাইব্রিড ও ব্যবসায়ী হালের রাজনীতিক এমপিদের নির্বাচনী প্রচারে খরচ করতে না দিয়ে আমলারা নিয়ে নিল সে অর্থ। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে বিরোধী জোটের কর্মী সমর্থকরা কেন্দ্রগুলোতে উপস্থিত ছিল না এবং পুলিশ ও আমলারা ৩০ থেকে ৫৫ ভাগ ভোটার উপস্থিতিকে ৮০ থেকে শতভাগ পর্যন্ত দেখায়নি।কিন্তু এর কি প্রয়োজন ছিল? প্রকৃতপক্ষে যে ভোটার উপস্থিত ছিল তার হিসেবে আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা ৫১ ভাগের বেশী ভোট পেলেইতো নিরংকুশ বিজয়ী হতো।তাহলে কেন অতিরঞ্জন? উদ্দেশ্য একটাই শেখ হাসিনার আমলের নির্বাচনকে ইতিহাসে প্রশ্নবিদ্ধ করে রেখে তাঁর সকল অর্জনকে ম্লান করে দেয়া। আর এই অজুহাত দিয়ে মধ্যবর্তী নির্বাভনের দাবীর পথ তৈরি করে রাখা।যদি কোন অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করে এ দাবী মাঠে আনা যায়।
নির্বাচন শেষে আমলা ও পুলিশ সহ নির্বাচন প্রশাসন থেকে মুখে মুখে ব্যাপক ভাবে ছড়ানো হলো, আগের রাতে ব্যালট কেটে বাক্স ভর্তি করে রাখা ছিল।পুলিশ এবং আমলারাই আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় এনেছে এবং রেখেছে।এরা আওয়ামীলীগ এর পিছন থেকে সরে গেলে আওয়ামীলীগের সটাং ভূমিতে ধপাস।আওয়ামীলীগের সর্বত্র হাইব্রীড ক্ষমতাবানরা এ তত্ত্ব বিশ্বাস করে। নেত্রীও শুনতে শুনতে এবং গোয়েন্দা প্রতিবেদন দেখে তাই বিশ্বাস করেন। সত্যিইতো পুলিশ এবং আমলারাই তাঁকে ক্ষমতায় রেখেছে।অতএব তাদের উপর নির্ভর করা যায়।ফল যা হবার তাই হলো আমলা এবং পুলিশ প্রশাসন রাজনীতিকদের অবজ্ঞা অপমান করা শুরু করলো।
দূর্ণীতির মহোৎসবে মেতে উঠলো তারা।২০১৭ এর আগ পর্যন্ত রাস্তা ঘাটে চায়ের দোকানে চাকুরী নিয়োগের দর দাম শোনা যেত।এখন শোনা যায় ঠিকাদারীর, বালু পাথর সাপ্লাইয়ের পারসেন্টেজ এর দর দামের হিসেব।অবস্থা এমন যে মনে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীও এসব দেখে শুনে না দেখার না শোনার ভান করে আছেন ক্ষমতা ধরে রাখার স্বার্থে।নইলে তিনি দূর্ণীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা দিয়ে সম্রাটকে জেলে পুড়ে, ওমর ফারুক চৌধুরীকে, মোল্লা কাওসার ও পংকজ দেবনাথদের পদ হারা করে আমলাদের পালায় এসে থেমে গেলেন কেন? আশ্রায়ণ প্রকল্পের পরিণতির পরে এখন তিনি চোখের জল ফেলে আফছোস করে বলেন ‘ আমার বাবা সত্যি বলেছিলেন যে তিনি পেয়েছেন চোরের খনি’। এরকম ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে।
কিন্তু আমলাদের এ দৌরাত্মের শেষ কোথায়? আমি মনে করি আশ্রায়ণ কান্ড শুধু দূর্ণীতি ময় শেখ হাসিনার আমলকে প্রশ্নবিদ্ধ করার এক গভীর ষড়যন্ত্র।তা সহজেই অনুমান করা যায় আশ্রায়ণের জমি নির্বাচন, বরাদ্দ,নির্মাণ কৌশল এবং ঘর প্রাপ্তদের তালিকা দেখেই।এই যে জঞ্জাল ক্ষমতা হারানোর ভয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্রয়ে সৃষ্টি হয়েছে এ থেকে উত্তরণের উপায় কি নেই? শেখ হাসিনা কি ভুলে গেছেন তিনি জাতির পিতার কণ্যা? তিনি কি ভুলে গেছেন তিনি একুশ বছর লড়াই সংগ্রাম শেষে প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন? তিনি কি ভুলে গেছেন তাঁর শিকড় আমলা বা পুলিষ তোষণে নয় তাঁর শিকড় জনগণের মনের মনিকোঠায়, বঙ্গবন্ধুর প্রতি মানুষের ভালোবাসায়? তিনি কি মনে করেন তাঁর তিরোধানের পরে আওয়ামীলীগের আর ক্ষমতায় আসার প্রয়োজন নেই? তিনি কি ভাববেন না যে তাঁর পিতার স্বপ্নের দেশের কি হবে তাঁর অন্তর্ধানের পর? যদি না ভাবেন তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কি তাঁকে ক্ষমা করবে?
আমার, আমাদের শ্রদ্ধেয় আপা হয়তো তাঁর কৌশলের দ্বারা আরো একাধিক মেয়াদ নির্বাচনে দলকে জিতাতে পারবেন।কিন্তু তিনি কি অমরত্ব নিয়ে এসেছেন? তাঁর বর্তমান বয়স ৭৪ শেষ আর দুই মাস পরে পচাত্তরে পা দেবেন।এই মেয়াদের দুই বছর বাকী। মেয়াদ শেষে বয়স হবে ৭৭।আরো এক মেয়াদ শেষে হবে ৮২।তারপর? নেত্রী প্রধানমন্ত্রী অতূলনীয় প্রজ্ঞা ও দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রে।ধী শক্তিরও পরিচয় দিচ্ছেন বিভিন্ন আলাপচারিতায়।আমলাদের মধ্যে একুশ এবং ৭সাত মোট ২৮ বছরে আওয়ামী বিরোধীরাই প্রশাসন জেঁকে বসে আছে। প্রধানমন্ত্রী জানেন এরা তাঁর লোক নয়, তবু কাজ করাতে হবে তাদের দিয়ে। অতএব তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে কাজ করাতে হবে।তিনি বেতন কয়েকগুন বৃদ্ধি সহ তদের সুযোগ এর পর সুযোগ দিয়েছেন স্বভাব পরিবর্তনের আশায়।
কিন্তু কুকুরের লেজ সোজা হয় না।বরং তারা ১০০টাকার কাজে ১০ টাকা লোভী রাজনীতিকদের দেওয়ার ব্যবস্থা করে নিজে ৩০ টাকা বিদেশে পাঠিয়েছে।ঠিকাদার নিজের মুনাফাসহ অন্যান্য খরচ শেষে ২০ টাকায় কাজ করছে।দিন শেষে আমলাদের টাকার কোন হদিস থাকে না।লোভী রাজনীতিক তার পাওয়া দশ টাকা দিয়ে দলবাজী করে যা হয় দৃশ্যমান।যখন কথা ওঠে তখন আমলারা প্রধানমন্ত্রীকে দেখায় ‘ ঐযে দেখেন অমুক অবৈধ টাকা দিয়ে দলবাজী করে।’ এ ভাবেই শেখ হাসিনার নিজের কাছেও রাজনীতিকদের হেয় করে নিজেরা বিশ্বস্ত সেজে যায়। ফলে প্রধানমন্ত্রী আমলাদের উপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। মৌলিবাদীদের তোষণে তারা ফ্রাংকেন্সটাইনে পরিণত হয়েছে।যার প্রমাণ এ বছর মার্চে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে মোদীর আগমন বিরোধীতার নামে ব্রাম্মনবাড়িয়া সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের নৈরাজ্য সৃষ্টি। এ ভাবেই দেশ এক চতূর্মুখী জঞ্জালের আবর্তে পতিত।
শেখ হাসিনা উত্তর কালে সে পাঁচ,দশ বা পনেরো বছর পরেই হোক না কেন আওয়ামীলীগ বা দেশ কি এ অবস্থা থেকে বেরোতে পারবে? তাঁর মত নেতৃত্ব যখন পারছেন না তখন অন্য কোন ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব পারবেন বলে আশা করা যায় না।কারণ ভবিষ্যৎ প্রজন্মে যাদের আশা করা যায় তারা শেখ হাসিনার মত বারবার ধ্বংসস্তুপের মধ্য থেকে ওঠা ফিনিক্স পাখি হবেন না কেউ বলেই তারা এতটা দক্ষ বা সাহসী হবেন এ আশা করা বাতুলতা মাত্র। সে ছাড়া রয়েছে শেখ পরিবারের নামে বেড়ে ওঠা একঝাঁক অর্থবিত্তশালী তরুন নেতৃত্ব যারা ক্ষমতার বলয়ের মধ্যে বড় হয়েছেন, যারা রাজনৈতিক উত্থান পতন বোঝেন না বা মাঠের রাজনীতিও বোঝেন না।কিন্তু তারা ক্ষমতা এবং এর সাধ সহ এর সুবিধা বোঝেন।ফলে হাসিনা উত্তরকালে এদের মধ্যে ক্ষমতার লড়াই অবশ্যম্ভাবি।সে লড়াই আওয়ামী লীগকে নাস্তনাবুদ করে ছাড়বে। যার ফলে দেশ হয়ে পড়বে বিপর্যস্ত।সে সুযোগে দেশ বিরোধী মৌল- জঙ্গীবাদী গোষ্ঠি যে ক্ষমতায় আসবে না তা হলফ করে বলা যায় না। তা যদি ঘটে তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে চিরদিন শতাব্দির পর শতাব্দি দায়ী হয়ে থাকবেন শেখ হাসিনা। থাকবেন এ জন্য যে তাঁর সাহস, মেধা দক্ষতা প্রজ্ঞা ও দূরদৃষ্টি থাকা সত্ত্বেও এবং সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি সমাজ ও রাষ্ট্রের, দল দেশের এবং প্রশাসনের জঞ্জাল দূর করেননি কেন? শেখ হাসিনা এখন যে ভাবে অপ্রতিরোধ্য দৃঢ়তা নিয়ে সব কিছু সামলাচ্ছেন তাতে একমাত্র তাঁর পক্ষেই সম্ভব সর্বব্যাপী জঞ্জাল দূর করা।জাতির পিতার দেখানো পথে যে পথে গিয়ে তাঁকে জীবন দিতে হয়েছে সেই পথে দূর্ণীতিমুক্ত দলীয় প্রশাসন ও শক্তিশালী জেলা সরকার প্রবর্তন সহ টাকাওয়ালা শতকরা পাঁচজনের গণতন্ত্রের পরিবর্তে ধনী গরীব নির্বিশেষে শতভাগ মানুষের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা তাঁর পক্ষেই সম্ভব। প্রশাসন ও রাজনীতির নৈতিকতার জঞ্জাল সহ সাম্প্রদায়িক শক্তিকে কঠোর ভাবে নির্মূল করা তাঁর পক্ষেই সম্ভব।কারণ তিনি সকল চাওয়া-পাওয়া ডর- ভয়,লোভ- লালসা সহ প্রতিদন্ধিতা বা প্রতিযোগিতারও ঊর্ধে। তাই সর্বগ্রাসী জঞ্জাল তাঁকেই সাফ করতে হবে।
শ্রদ্ধেয় আপা, প্রাণপ্রিয় নেত্রীর কারাবন্দী দিবসের প্রাক্কালে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি হিসেবে নয় দেশের একজন সাধারণ দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে, স্বাধীনতা প্রিয় মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী হিসেবে আমার মতো আরো বিশ্বাসী সকলের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রাধানমন্ত্রীর কাছে এটাই কামনা। নতুবা ভবিষ্যৎ অনাসৃষ্টির দায় বহন করতে হবে তাঁর আত্মাকেই
ড. মশিউর মালেক
প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী সভাপতি,বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, লেখক, গবেষক এবং রাজনীতি বিশ্লেষক, ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদ। আত্মতুষ্টিই শান্তির উৎস এর উপরে ইউরোপে গবেষণা করে ” নিজকে সন্তুষ্ট কর” প্রপঞ্চের প্রবক্তা হিসেবে আমেরিকার ফোর্ট জোনস ইউনিভার্সিটি থেকে পি এইচ ডি ডিগ্রী অর্জন।
IBGNews Bangladesh correspondent Anowarul Hoque Bhuiyan