তালিবানি অন্ধকার থেকে বিশ্ব মহিলা মুক্তির প্রতীক ডেনমার্কের নাদিয়া নাদিম
Kolkata,24 June 2021:আজ ফুটবল বিশ্বে বিস্ময় ডেনমার্কের মেয়েটির নাম নাদিয়া নাদিম। জন্ম আফগানিস্তানে। ১১ বছর বয়েসে তার বাবাকে হত্যা করে আফগান তালিবান। একটা ট্রাকের পেছনে বসে দীর্ঘ দুর্গম পথ পারি দিয়ে তার ফ্যামিলি ডেনমার্কে পালিয়ে যায়। এক অসম লড়াই করে জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার লড়াই। নতুন দেশ নতুন পরিবেশ আর সামান্য সাহায্য।
কিন্তু হার সে মানেনি আর তাই নাদিয়া ডেনমার্কের হয়ে ৯৮টা ফুটবল ম্যাচ খেলেছে এবং প্রায় ২০০ গোল করেছে। ফুটবলের পাশাপাশি সে ডাক্তারি পাশ করেছে এবং এখনো পড়ছে একজন রিকন্সট্রাক্টিভ সার্জন হওয়ার জন্য। সে অনর্গল ১১ টি ভাষায় কথা বলতে পারে।
আপনার মেয়েকে নাদিয়ার গল্প শোনান। তাকে জানান সমাজ তাকে দুর্বল ভাবলেও সে পৃথিবী জয়ের ক্ষমতা রাখে।
ডেনিশ জাতীয়তার আইনে নাদিম 2006 সালে ১৮ বছর বয়সী না হওয়া পর্যন্ত নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ২০০৮ সালে নাগরিকত্ব পাওয়ার পরে ফিফার যোগ্যতার বিধি নাদিমকে ডেনমার্কের হয়ে খেলতে বাধা দেয়, কারণ তিনি পরিণত হওয়ার পাঁচ বছর পরেও প্রয়োজনীয় বাসিন্দা ছিলেন না। ২০১৮ পরবর্তীতে ডেনিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিইউ) চ্যালেঞ্জের ফলে ফিফার আইন বিভাগটি নাদিমের মামলার বিধিগুলিকে শিথিল করেছিল।
২০০৯ সালের অ্যালগারভ কাপে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ২-০ গোলে পরাজয়ের মধ্য দিয়ে অভিষেক ঘটে তাঁর, সাথে সাথে নাদিম ডেনমার্ক জাতীয় দলের সদস্য হন। এটি করতে গিয়ে তিনি ডেনমার্কের সিনিয়র জাতীয় ফুটবল দলের প্রতিনিধিত্বকারী প্রথম ন্যাচারালাইজড সদস্য হন। ২০০৯ সালে ফিনল্যান্ডে উয়েফা মহিলা ইউরোতে ডেনমার্কের তিনটি গেমসে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।
উয়েফা মহিলা ইউরো ২০১৩ এর জন্য জাতীয় কোচ কেনেথ হেইনার-মুলারের ডেনমার্ক স্কোয়াডে তাকে নেয়া হয়েছিল। ডেনমার্কের স্বাগতিকদের বিপক্ষে উদ্বোধনী গ্রুপ ম্যাচে সুইডেন ১-১ ব্যবধানে ম্যাচ ড্রয়ের পর আর পিছন ফিরতে হয়নি ।
উয়েফা মহিলা ইউরো 2017 টুর্নামেন্টে, তিনি ডেনমার্কের অগ্রগতিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিলেন, নকআউট পর্বে ডেনমার্ক ২-১ ব্যবধানে ফেভারিট জার্মানিকে হারিয়ে দেয় এবং ফাইনালে নেদারল্যান্ডস বিরুদ্ধে শুরুতে এগিয়ে যাওয়ার গোল করলেও শেষ পর্যন্ত ডেনমার্ক নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরে যায় ৪-২ ব্যাবধানে।
২২ শে অক্টোবর, ২০২০, ডেনমার্ককে উয়েফা মহিলা ইউরো ২০২২ এর কোয়ালিফাই ম্যাচে ডেনমার্ক ফ্লোরেন্সে ইটালির বিপক্ষে ৩-১ ব্যবধানে জয়ের ম্যাচে তিনি ২ টি গুরুত্বপূর্ণ গোল করার পরে, নাদিয়া ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। দুটি গোল আসন্ন ইউরোতে ডেনমার্কের জায়গাটি সুরক্ষিত করেছিল।
এই লড়াই পৃথিবীর প্রতিটা মেয়ে কে জীবন যুদ্ধে সেরাটা দিতে উদ্বুদ্ধ করবে । আফগান মৌলবাদীদের লড়াই সে ফিরিয়ে দিয়েছে বিজয়িনীর মতো ।
নাদিয়া নাদিম সারা বিশ্বে মহিলা মুক্তির প্রতীক ।