পশ্চিমবঙ্গে নতুন সরকার – ছোট্ট আশা বড় প্রত্যাশা
ড: পলাশ বন্দোপাধ্যায়, কলকাতা:
শ্রদ্ধেয়, মানুষের রায়ে নির্বাচিত আগামী পাঁচ বছর রাজ্য প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত শাসক গোষ্ঠী।
সবুজ,গেরুয়া,লাল কোনো রঙেরই প্রতিনিধি নই আমি।এ রাজ্যের একজন সাধারণ নাগরিক।
নির্বাচনে কারা জিতবে কারা নয়, তা জানার আগেই আমার এ লেখা আমি তৈরি করে রেখেছিলাম।
এবারকার পরিচ্ছন্ন নির্বাচনে আপনাদের জয়লাভকে হার্দিক অভিনন্দন জানিয়ে সাধারণের স্বর হিসেবে মাত্র দশটি দাবী পেশ করতে চাই আপনাদের কাছে।
- আগামীকাল নয়।আজ থেকেই কোভিডের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করুন আপনারা। দরকারে আমাদের বিধি মানাতে যথেষ্ট কড়া হয়ে।
যুদ্ধ জয়ের অভিজ্ঞতা আপনাদের আছে। আপনারা পারবেন। - মানুষের সেবা করবেন বলে কথা দিয়েছেন আপনারা। আপনাদের দলে ঘাপটি মেরে বসে আছে যেসব সমাজবিরোধীরা, তারা আপনাদের অস্বস্তির কারণ হবে এ ব্যাপারে।আপনাদের দরজা বন্ধ হোক তাদের জন্য।
- এক একজন মানুষের রাজনৈতিক দর্শন, বিশ্বাস ও চেতনা এক এক রকম ।এমন হতেই পারে,কারো সঙ্গে আপনাদের মিললো না। তাঁরাও যেন আপনাদের থেকে সমান বিচার পান।যেমন পান, যাঁদের আপনাদের সঙ্গে মেলে তাঁরা।
- আপনাদের জন প্রতিনিধিরা যেন বিনয়ী ও সংবেদনশীল হন মানুষের প্ৰতি।মানুষের কথা শোনেন।কারণ মানুষ সে ভরসা ও বিশ্বাস থেকে নির্বাচিত করেছেন আপনাদের।
- সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু,উঁচু,নিচ, গরিব বড়লোক নির্বিশেষে সবার প্রতি আপনাদের যেন উপযুক্ত নজর থাকে।তাঁরা কি তাঁর জন্য তাঁরা দায়ী নন।
- রাজ্যের আইনের শাসন যেন কোনোমতেই শিথিল না হয়। সবকিছু যেন আইনানুগ ও পরিচ্ছন্ন হয়। আপনাদের ও অন্যদের, এই দুইভাগে যেন বিভাজিত না হয় নাগরিক সমাজ। কারণ শাসকের সন্তান সবাই।
- মানুষ যেন নিজের স্বচ্ছলতায়, নিজের অধিকারে নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারে। তাঁদের ইট কাঠ পাথর ইচ্ছা অনিচ্ছা, সব যেন তাঁদেরই হয়।
- কাউকে যেন পার্টিফান্ডে চাঁদা দেওয়ার জন্য,পার্টিতে নাম লেখানোর জন্য জুলুমবাজির শিকার না হতে হয়।অধিকাংশ মানুষেরই চাহিদাই হলো শান্তিতে সাধারণ জীবনযাপন করা।
- মৌলিক অধিকারের প্রাপ্তি বা নাগরিক পরিষেবা পেতে মানুষকে যেন উপরি দিয়ে কারো কাছে দরবার করতে না হয়।
- তৃণমূল স্তর থেকে আপনাদের প্রশাসন এমন দুর্নীতিমুক্ত ভাবে ঢেলে সাজান যাতে প্রতিটি তুচ্ছ ব্যাপারে নাক গলাতে না হয় আপনাদের প্রশাসনিক প্রধানকে।
জানি ,অনেক বেশি চেয়ে ফেললাম এবং একদিনে অর্জিত হবেনা এসব।
তবুও, শুভবুদ্ধি ও তীব্র ইচ্ছেশক্তিতে এই পৃথিবীরই মানুষ কিন্তু চাঁদেও চলে গেছে।অন্য সভ্য দেশগুলো অনেক এগিয়ে গেছে নাগরিকদের মানুষ হিসেবে মর্যাদা দেবার ব্যাপারে।
আমাদের স্বল্পকালীন স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে তাকিয়ে জনমোহিনী না হয়ে বরং সেই কড়া অভিভাবকের মতো আচরণ করুন যাঁদের অনুশাসনে তাঁদের সন্তানেরা ভবিষ্যতে দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে নিজেদের যোগ্যতা বলে।
ভালো থাকবেন।
আগামী পাঁচ বছরের জন্য আপনাদের পাশে থাকতে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে, আশায় বুক বেঁধে, আপনাদের সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করছি।।