বাংলাদেশের মাগুরায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়োমের অভিযোগ: মন্ত্রণায়ের তদন্ত শুরু

0
774
বাংলাদেশের মাগুরায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়োমের অভিযোগ: মন্ত্রণায়ের তদন্ত শুরু
বাংলাদেশের মাগুরায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়োমের অভিযোগ: মন্ত্রণায়ের তদন্ত শুরু
0 0
Azadi Ka Amrit Mahoutsav

InterServer Web Hosting and VPS
Read Time:11 Minute, 14 Second

বাংলাদেশের মাগুরায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়োমের অভিযোগ: মন্ত্রণায়ের তদন্ত শুরু

তরিকুল ইসলাম লাভলু, বাংলাদেশ প্রতিনিধি : মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবু আব্দুল্লাহ হেল কাফীর বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে স্থানীয় হাসানুজ্জামান সুমন ও উলফাত মোল্যাসহ একাধিক ব্যক্তি স্বাক্ষরিত এক অভিযোগপত্র স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে দায়ের করেছেন। অভিযোগ প্রাপ্তির পর তদন্তের জন্য মাগুরা জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ।

অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার নামে প্রায় ১৩ একর জমির উপর অবস্থিত কয়েক লাখ টাকার পুরনো গাছ বেআইনিভাবে কর্তন করে বিক্রি করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তিনি মহম্মদপুর আদর্শ টেকনিক্যাল এ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের  অধ্যক্ষ হওয়ায় মাসিক ৩৮ হাজার ৪ শত ১১ টাকা এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এর সম্মানী ভাতা ৪৫ চাজার টাকাসহ অন্যান্য সুভিধাসমূহ একত্রে উত্তোলন করেছেন। অভিযোগ পত্রে আরো বলা হয়েছে তিনি প্রভাব খাটিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়েল অধীনে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে টেন্ডারকৃত ব্রীজ কালভাট এর দরপত্রের সিডিউল বিক্রির ১৭ লাখ টাকা  তৎকালীন ইউএনও মিজানুর রহমান ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামের যোগসাজসে ভাগ বায়োয়ারা করে আত্মসাৎ করেন উপজেলা চেয়ারম্যান। এ ছাড়া পরিষদ সংলগ্ন হেলিপ্যাডে শবজি চাষ দেখিয়ে ১৪ লাখ টাকা উপজেলা পরিষদের তহবিল থেকে উত্তোলন করেছেন। উপজেলা পরিষদ কর্তৃক একই অর্থ বছরে কোটেশানে ৩০ লাখ টাকার বেশী কাজ করার বিধান না থাকলেও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ইউএনওর সাথে যোগসাজসে ১ কোট ১১ লাখ ৬৯ হাজার দুইশত বারো টাকার কাজ টেন্ডার ছাড়ায় এক্সপার্ট ইনঞ্জিয়ারিং কোম্পানি নামক একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অবৈধ্যভাবে কাজটি তড়িঘড়ি করে সম্পন্ন করেছেন। বাসাবাড়ি রক্ষনাবেক্ষণ ও সংস্কার কাজ একই কোম্পান্নি দিয়ে নামেমাত্র করিয়ে ২০ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন।  তার নামে মাগুরার বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জর্জ আদালতে ২৭ লাখ টাকার চেক জালিয়াতির একটি মামলা রয়েছে। মামলা নং-২৪/১৯ তারিখ ১৫-০৭-২০১৯। যা আদালতে বিচারধীণ রয়েছে। দরপত্র আহŸবান না করে কোটেশানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর মুর্যাল নির্মাণ করেছেন। ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে টিআর, কাবিটা, কাবিখা ও এডিপির প্রকল্প বাস্তবায়নে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। তিনি মহামারি করোনার শুরুতে জনগনের পাশে না থেকে বিনা ছুটিতে চার মাসের অধিক সময় ঢাকা অবস্থান করেছেন।

২০২০-২১  রাসেল নামের এক অজ্ঞাত ব্যক্তির মাধ্যমে কোন প্রকার কাজকর্ম ছাড়াই মনগড়্ বিল ভাউসার তৈরী করে  অপ্রত্যাশিত খাতে ৫ লাখ, অফিস সরঞ্জামে ০৩ লাখ, আসবাবপত্র মেরামতে ৫০ হাজার, পানির পাম্প মেরাততে ৫০ হাজার, বর্জ্য অপসারনে ০১ লাখ, নবগঙ্গা বাসা মেরামত ১০ লাখ টাকা তহবিল থেকে উত্তোলন করার অভিযোগও উঠেছে। আবার একই কাজে একাধিক বিল ভাউচার করেছেন। এছাড়া তিনি স্থানীয় ঠিকাদার কানু তেওয়ারী, চেয়ারম্যানের সিএ জাকির হোসেন, ইউএনও’র অফিস সহকারি বিধান সাহাসহ অফিসের পিয়ন ও নৈশ্য প্রহরীর নামে  একাধিক বিল ভাউচারের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন বলে জানা যায়।

জানা গেছে, যাদের নামে এ সকল বিল ভাউচার করা হত গোপনীয়তা রক্ষার্থে তাদের কে এর থেকে মোটা অঙ্কের কমিশন দেওয়া হত। বিল ভাউচার থেকে জানা যায়, স্থানীয় ঠিকাদার কানু তেওয়ারীর মাধ্যমে তহবিল থেকে ২০ লাখ টাকার অধিক উত্তোলন করা হয়েছে। রাসেলের পরিচয় না মিললেও  স্থানীয় ঠিকাদার কানু তেওয়ারী বলেন, পরিষদ আমার নামে কিভাবে কোটেশান করে বিল ভাউসার করে  টাকা উত্তোলন করেছে বিষয়টি আমার জানা নেই। উপজেলা চেয়ারম্যানের সিএ জাকির হোসেন ও ইউএনও’র অফিস সহকারি বিধানও  সাহা সকল বিষয় অস্বীকার করেন।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভাউচারে বিষ্ময়কর বিল করা হয়েছে। যেমন, মুর্যালের সামনে মই দিয়ে মাটি সমান করতে খরচ দেখানো হয়েছে ১০ হাজার টাকা, ৩টি গাছ কর্তনে দেখানো হয়েছে ২৫ হাজার ৭ শত ৫০ টাকা, ব্যাডমিন্টন কোট পরিস্কার করতে ১২ হাজার ০৩ শত টাকা, কোদাল, দা, সোল ও টেংগি ক্রয় ৮ হাজার টাকা, একজন অতিথির নাস্তা ০৩ হাজার টাকা,  মৎস অফিসের অবৈধ্য কারেন্ট জাল পোড়ানো খরচ ১৫ হাজার ৭ শত টাকা, ইমরুলের খাবার ৫ হাজার ৮ শত টাকা। কিন্তু কে এই ইমরুল তার তথ্য ও পরিচয় পাওয়া যায়নি। পানির ট্যাঙ্কি পরিস্কার ১১ হাজার ৫ শত ২০ টাকা,  লাইব্রেরীর মালামাল স্থানান্তর ৯ হাজার টাকা,  গাছের গোড়া রং করা ২ লাখ টাকা। এ রকম ভাবে কোটি কোটি টাকা পরিষদের তহবিল থেকে বিনা কারনে নামেমাত্র বিল ভাউচার করে টাকা উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে দোকান ঘর নির্মাণ করে দেবার কথা বলে শতাধিক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ৫ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে উপজেলা চেয়াম্যানের বিরুদ্ধে। অভিযোগ প্রাপ্তির পর ১২ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে স্বাক্ষরিত একটি পরিপত্রে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব বিষয়টি তদন্তের জন্য মাগুরা জেলা প্রশাসক কে নির্দেশনা দিয়েছেন।

২০১৯-২০ অর্থ বছরে টেন্ডারকৃত ব্রীজ কালভাট এর দরপত্রের সিডিউল বিক্রির ১৭ লাখ টাকা  আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে আমার দপ্তরে ব্রীজ কালভাটের কোন টেন্ডার হয় নাই। ওটা হয়েছেছিল ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে। কিন্তু মুল বিষয় এড়িয়ে যান তিনি।
উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বেবি নাজনীন (প্যানেল চেয়ারম্যান) বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যার আগের ইউএনও মিজানুর রহমানের সাথে যোগসাজস করে পরিষদের সবকিছু লুটেপুটে খেয়েছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে তার অনিয়মতান্ত্রিক কাজকর্মে বাধা দিলে ও তিনি আমার কথা শোনেননি। উপয়ান্তর না পেয়ে পরে আমি দুদকসহ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি। আমি চাই তদন্তপূর্বক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামানন্দ পাল বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবহিত নই। তবে তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে পারেন।

মাগুরা জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম বলেন, তদন্তের জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে নির্দেশনা পেয়েছি। শীঘ্রই তদন্ত  করে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মমতাজ বেগম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তের জন্য মাগুরা জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

অভিযুক্ত উপজেলা চেয়ারম্যান আবু আব্দুল্লাহ হেল কাফী বলেন, উপজেলা পরিষদের উন্নয়নে নিয়মনীতি মেনে কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করে বিল উত্তোলন করা হয়েছে। এখানে বিন্দু পরিমান দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়া হয়নি।

About Post Author

Editor Desk

Antara Tripathy M.Sc., B.Ed. by qualification and bring 15 years of media reporting experience.. Coverred many illustarted events like, G20, ICC,MCCI,British High Commission, Bangladesh etc. She took over from the founder Editor of IBG NEWS Suman Munshi (15/Mar/2012- 09/Aug/2018 and October 2020 to 13 June 2023).
Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Advertisements

USD