ভাবের ঘরে চুরি আর অনুশোচনার পাহাড়
ড:পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায় ,কলকাতা,০৪ অক্টোবর ২০২০
“জীবন অঙ্কটাকে মেলাতে গিয়ে জানিনা আমি কি পেলাম ,
শূন্য দিয়ে শুধু ভরে গেলাম”
কিছু মানুষের আজীবনের খেদ যে তিনি মানুষ বা সমাজের থেকে তাঁর প্রাপ্য সম্মান এবং মর্যাদা টুকু পেলেন না।তার পর তা নিয়ে কান্নাকাটি করে বেশিরভাগ সময়টা কাটিয়ে দেন। এ ব্যাপারে নিয়ে বিশেষ কিছু আলোচনা বা তর্কের অবকাশ নেই।শুধু এটুকু বলা যায়,খুব ব্যতিক্রমী কোনো কিছু না ঘটলে আপনি আপনার আচরণ এবং কাজের প্রাপ্য মর্যাদাটুকু সমাজের কাছ থেকে ফেরত পাবেনই যদি প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি বা মর্যাদাকে আপনি প্রাপ্তির মাপকাঠি না ধরে বসে থাকেন।
জীবন,পেশা এবং সমাজের সব ক্ষেত্রেই এ সত্যি প্রযোজ্য।আপনি আপনার পরিবারের প্রধান হলে নিরপেক্ষ ভাবে পরিবারের সবার ভালো মন্দের দিকে আপনাকে নজর দিতে হবে।সরকারি বা বেসরকারি চাকুরে হলে নিষ্ঠার সঙ্গে ও সততার সঙ্গে আপনার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকতে হবে।শিক্ষক হলে শিক্ষার মান উন্নয়নটাই আপনার কাছে পাখির চোখ হতে হবে।সমাজকর্মী হলে প্রতিদিন প্রতিমহূর্তে যাতে সমাজের উন্নতি হয় সেটা দেখতে হবে।রাজনৈতিক নেতা হলে ভোট ভোট করে হিসেব নিকেশ না করে দেশের কাজটা করে যেতে হবে।
যে কোনো সামাজিক অবস্থানে বা পেশায় থেকে আমরা অতি সাধারণ যে ভুলটি করি তা হলো সাধারণ মানুষকে বোকা ঠাওরাই,এবং বিভিন্ন ভাবে তাকে আমরা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করি।বোঝাতে চেষ্টা করি,দেখ আমি কত মহান।কিন্তু বাস্তবিক সত্যি যেটা,সেটা হলো সাধারণ মানুষের ইন্দ্রিয় ভীষণ সজাগ এবং বিচার করা এবং বিচারের শেষে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা তথাকথিত বুদ্ধিমানেদের থেকে কোনো অংশে কম নয়।সুতরাং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে স্বার্থবাদীর মতো নিজের ঢাকটি না পিটিয়ে যদি ওই সময়টি নিজ কাজে মনোনিবেশ করেন,মানুষ তাহলে আপনাকে আপনার যোগ্য মর্যাদা ও সম্মান দেবেন।সে অর্জন আপনি অনুভব করতে পারবেন।
আমাদের সমস্যা হলো আমাদের অসততা, এবং কাজ না করে ঘুর পথে চালাকির মাধ্যমে কিছু অর্জনের চেষ্টা।এ জন্যে আমাদের অপ্রাপ্তির হাহাকার বেশি। আরো একটা ব্যাপার মাথায় রাখা দরকার,তা হলো,আসল প্রাপ্তি সে প্রাপ্তি যা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মেলে,কারণ তাঁরাই সমাজের মেরুদন্ড।প্রতিষ্ঠান হলো সমাজের মুষ্টিমেয় ও প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তির বিচরণক্ষেত্র। সেখানকার প্রাপ্তি, হয় বিভিন্ন রকম অংক কষে, অথবা সাধারণ মানুষের চাহিদার চাপে ঘটে।আপনার সাধারণের থেকে অপ্রাপ্তি বা অশ্রদ্ধা, সুতরাং আপনারই ব্যর্থতা,এ অমোঘ সত্য মেনে নিয়ে নিজের কাজে ফিরুন।আর অপ্রাপ্তির দুঃখ থাকবে না।নিশ্চিত।
●●●●●●●●●
পলাশ_বন্দ্যোপাধ্যায়
০৪.১১.২০২০