আপনি কি পরিণতমনস্ক দায়িত্ব সচেতন নাগরিক?
ড:পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায় , কলকাতা ,২৪.০৭.২০২০
আপনি কি পরিণতমনস্ক দায়িত্ব সচেতন নাগরিক?অথবা,বয়স কি কুড়ি পেরিয়ে গেছে?তাহলে এবার আপনার বালখিল্য স্বভাবটা ছেড়ে দিন।কেমন কথা?দৃষ্টান্তের তো শেষ নেই! রাত হয়েছ আলোচনা বাড়াবো না।তাই দু চারটি উদাহরণ দি।
রাস্তা দিয়ে হয়তো কোনো বিকলাঙ্গ যাচ্ছে। অথবা বয়স্ক অথর্ব মানুষ যাচ্ছে।তাদের হাঁটা চলা দেখে আপনার হাসির উদ্রেক হলো।তবুও দোহাই! হাসবেন না।আপনি আর ছোট নেই।যন্ত্রণা অনুভব করতে না পারেন,চুপ থাকুন।মানুষ হিসেবে আপনি সেনসিটিভ বা পরিণতমনস্ক নন,এটা সহ নাগরিককে বুঝতে দেওয়ার মধ্য আপনার কোনো গরিমা নেই।
অথবা রাস্তা দিয়ে কোনো বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ বা ভবঘুরে যাচ্ছে।পরণে পোশাকের ঠিক নেই।আপনাকে হয়তো তারা গালাগাল করছে বা অকারণে আপনার দিকে তেড়ে আসছে। তেমন করছে কারণ তাদের মন বেসামাল।রাগ করবেন না।আক্রমণাত্মক হবেন না তাদের প্ৰতি।অন্যেরা তা করলে তাদেরও বিরত করুন।কারণ আপনি বড়। পরিণত।
আপনি হয়তো শহুরে।কেতাদুরস্ত।গ্রাম থেকে কোনো হাবাগোবা লোক নগরের গোলকধাঁধায় দিশাহারা হয়ে কোনো ঠিকানা গুলিয়ে ফেলে আপনার সাহায্য চাইছে।আপনি ছোট থাকলে হয়তো মজা দেখার জন্য তাকে ভুলভাল ঠিকানা বলে দিতেন।..দয়া করে করবেন না এমন।আপনার শহরে উনি যতটা আনস্মার্ট ওনার গ্রামে আপনি তার থেকেও বেশি।সেখানে কিন্তু তিনি আপনাকে সাদরে আমন্ত্রণ করে লজ্জায় ফেলে দেবেন।
আপনি কি আপনার রাজ্যের কোনো একটা শহরের এক বিশেষ হোটেলের এজেন্ট যার নিরাপত্তা একা কোনো মহিলার পক্ষে নিরাপদ নয়?এই পরিস্থিতিতে এক একা বিদেশি মহিলা রাস্তায় আপনার কাছেই কাকতলীয় ভাবে একটা হোটেলের সন্ধান চাইলো!আপনি সেটাই করুন যেটা তাঁর জন্য নিরাপদ হয়।দরকারে একদিন কম খান।আপনি হোস্ট, তিনি গেস্ট।আপনি দেশের প্ৰতিনিধিত্ব করছেন। পৃথিবী আপনাকে দেখছে। মনে রাখবেন।
কেউ হয়তো আপনার সামনে কোনো বোকা বোকা রসিকতা করলো।অথবা এমন পরিস্থিতিতে এমন কথা বললো যে একেবারে বেমানান।আপনি অসন্তুষ্ট না হয়ে তাকে ব্যাখ্যা দিন তার ভুলটা কোথায়।
আপনার অপরিণত সন্তান হয়তো আরেকজনের অপরিণত সন্তান তারই কোনো এক সহপাঠীর সঙ্গে ঝগড়া করছে।এক্ষেত্রে আপনি আপনার সন্তানের পক্ষ না নিয়ে দুজনেরই অভিভাবক হয়ে সে বিরোধের মধ্যস্থতা করুন।তারা আপনার থেকে ছোট এবং আগামী নাগরিক।তাদের হাতেই পৃথিবীকে দিয়ে যাবেন আপনি।তাদের শিখতে হবে।
বড় ও পরিণত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছু ছাড়তে হয়।আপনার আনন্দ পাওয়া,আপনার স্থূল রসিকতা অন্যের যন্ত্রণার কারণ হলে, তা বড় দুঃখজনক।আপনার মানসিকতার পক্ষেও।মনে রাখবেন।
●●●●●●●●
পলাশ_বন্দ্যোপাধ্যায়
২৪.০৭.২০২০