হুমায়ুন কবীর পরিচালিত আলেয়া প্রথম সপ্তাহে বাজিমাত করলো বাক্স অফিসে

0
2919
Super Hit Aleya - A Humayun Kabir Film 4
Super Hit Aleya - A Humayun Kabir Film 4
0 0
Azadi Ka Amrit Mahoutsav

InterServer Web Hosting and VPS
Read Time:27 Minute, 11 Second

হুমায়ুন কবীর পরিচালিত আলেয়া মুক্তি পায় ২৯ জুন বক্স অফিসে সুপারহিট

ফারুক আহমেদ

ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে চলছে বাংলা ছায়াছবি “আলেয়া।” ইতিমধ্যেই আলেয়া চলচ্চিত্রটি মানুষের মনে গভীর দাগ কেটেছে। বক্স অফিস কাঁপিয়ে সুপারহিট হল আলেয়া। সবাইকে মুগ্ধ করে দিল আলেয়া গল্প ও চিত্রনাট্য। ড. হুমায়ুন কবীর পরিচালিত চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় গত শুক্রবার ২৯ জুন।

রাজ্যের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে ড. হুমায়ুন কবীর পরিচালিত আলেয়া চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দর্শকমহলে ব্যাপক সাড়া জাগিয়ে মন জয় করে নিল। প্রিয়া সিনেমা হলে প্রিমিয়ার শো ছিল গত ২৯ জুন সন্ধ্যা ৬ টার সময়। ওই দিন সন্ধ্যায় ‘দেশ’ পত্রিকার প্রাক্তন সম্পাদক হর্ষ দত্ত সহ রাজ্যর বহু বিশিষ্ট মানুষ এবং আইপিএস, আইএএস অফিসার মহল উপস্থিত হয়েছিলেন। আলেয়া চলচ্চিত্রটি দেখে তারা মুগ্ধ হন এবং তারিফও করেন। ওইদিন সিনেমা জগতের বহু কলাকুশলীরাও উপস্থিত ছিলেন। যেমন উপস্থিত ছিলেন আলেয়া চলচ্চিত্র প্রডিউসার প্রদীপ চুড়িয়াল, প্রবীণ আগরওয়াল ও কার্যকারি প্রডিউসার সঙ্ঘমিত্রা রায় চট্টোপাধ্যায়, পরিচালক ড. হুমায়ুন কবীর, অন্দিতা কবীর, ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর অনিকেত চট্টোপাধ্যায়।

৫ জুলাই সন্ধ্যায় প্রিয়া সিনেমা হলে এক স্পেশাল শোয়ে উপস্থিত ছিলেন আলেয়া চলচ্চিত্রের নায়িকা তনুশ্রী চক্রবর্তী, খরাজ মুখোপাধ্যা, মধুমিতা চক্রবর্তী, সুমিত গাঙ্গালী, দেবাশিস সাহা, শুভ্রজিৎ মিত্র, প্রডিউসার প্রদীপ চুড়িয়াল, প্রবীণ আগরওয়াল ও কার্যকারি প্রডিউসার সঙ্ঘমিত্রা রায় চট্টোপাধ্যায়, পরিচালক ড. হুমায়ুন কবীর, ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর অনিকেত চট্টোপাধ্যায়।

রাজ্যের বহু প্রেক্ষাগৃহে এই বাংলা সিনেমাটি দেখার জন্য মানুষের ব্যাপক চাহিদা লক্ষ করা যায় এবং কয়েটি শো হাউসফুল হয়ে যায়। মুক্তি পাওয়া আলেয়া সিনেমার পরিচালক ড. হুমায়ুন কবীর এই সিনেমাতে তিনি লেটার মার্কস নিয়ে পাশ করলেন। প্রথম চলচ্চিত্র পরিচালনা করেই তিনি তাক লাগিয়ে দিলেন। ইতিমধ্যে ঝড় তুলেছে আলেয়া চলচ্চিত্র দর্শকমহলে। টানটান উত্তেজনায় পরিপূর্ণ আলেয়া থ্রিলার ও মর্মস্পর্শী গল্পটিও লিখেছেন ড. হুমায়ুন কবীর। অনেকদিন পর সপরিবারে দেখার মতো দুর্দান্ত একটি অনন্যসাধারণ বাংলা সিনেমা উপহার দিলেন ড. হুমায়ুন কবীর। আলেয়া সিনেমা না দেখলে সমাজের অনেক জলন্ত সমস্যা আপনার অদেখা থেকে যাবে। এই চলচ্চিত্রে প্রত্যেক অভিনেতার অভিনয় প্রতিটি মুহূর্তে আপনাকে অভিভূত করবে। আর দেরি করবেন না চলে আসুন প্রেরক্ষাগৃহে। আপনার প্রয়াস বিফলে যাবে না বরং সমৃদ্ধ করবে আপনার মনের আকাশ।

বাঙালী সিনেমা প্রেমী মানুষের মনে গভীর আশা জাগালেন ড. কবীর। আগামী দিন গুলোতে তাঁর কাছ থেকে আমাদের প্রত্যাশা আরও বেড়ে গেল। ড. হুমায়ুন কবীর আরও কিছু ছায়াছবি উপহার দেবেন আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।

“আলেয়া” চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত হয়েছিল চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলতে কিছু শব্দ যেমন, ত্রিশূল গাঁথা, কাফের, আমেদাবাদ, গুজরাট ও জয় শ্রীরাম এই পাঁচটি শব্দই সেন্সর বোর্ডের আপত্তিজনক মনে করেছিলেন এবং সাইলেন্ট করে দিলে তবেই মিলবে ছাড়পত্র বলেছিলেন। সেন্সর বোর্ড জানিয়ে দিয়েছিল পরিচালক ড. হুমায়ুন কবীরকে। সেন্সর বোর্ডের কথা মেনে নিতেই ছাড়পত্র মিলল এবং ড. হুমায়ুন কবীর পরিচালিত আলেয়া চলচ্চিত্র মুক্তি পেল। দর্শাকের মনও জয় করল আলেয়া চলচ্চিত্র।

দক্ষ প্রশাসক ও সমাজ সচেতন পুলিশ আধিকারিক ড. হুমায়ুন কবীর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা থানার অন্তর্গত রায়পুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বহু সংগ্রামের মধ্য দিয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জন করেছেন। মেধাবী ছাত্র হিসেবে তাঁর সুনাম আছে গোটা রাজ্যে। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ড. হুমায়ুন কবীর উদ্ভিদবিদ্যায় এমএসসি করেছেন। এমএসসি’র ফাইনাল পরীক্ষায় তিনি দারুণ ফল করেছিলেন (প্রথম শ্রেণিতে প্রথম)। ওইসময় তিনি ভাল ফল করে জেলার মুখ উজ্জ্বল করেছিলেন। হুমায়ুন কবীর পিএইচডি ডিগ্রিও অর্জন করেছেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কয়েকমাস শিক্ষকতার চাকরিও করেছেন। ১৯৯০ সালে ড. হুমায়ুন কবীর পশ্চিমবঙ্গ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় সফল হয়ে পুলিশের চাকরিতে যোগদান করেন।

রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় অতি দক্ষতার সহিত দায়িত্ব সামলেছেন তিনি।

বীরভূম, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ জেলার সুপারিন্টেনডেন্ট অব পুলিশ এই গুরুদায়িত্বপূর্ণ পদে আসীন হয়ে তিনি বিশেষ দক্ষতার পরিচয়ও দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের ডিআইজি পদে কর্মরত। রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে সম্প্রতি অশান্ত দার্জিলিংকে শান্ত করতে বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছিলেন।

২০০১-২০০২ সালে সংযুক্ত জাতিপুঞ্জের হয়ে বসনিয়া-হারজিগোভিনায় পিস কিপিং ফোর্স হিসাবেও কাজ করেছেন।

এই মুহূর্তে তিনি বাংলা সাহিত্যজগতে একজন প্রখ্যাত সাহিত্যিকও বটে। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ ‘নখের দাগ’ প্রকাশিত হওয়ার আগে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়েছিল ‘সানন্দা’ পত্রিকায়। এছাড়াও ‘আলেয়া’ নামক গল্পগ্রন্থ পাঠক দরবারে বিশেষ দাগ কেটেছিল। কয়েকমাস ধরে ড. কবীর-এর লেখা উপন্যাস ‘দেশ’ পত্রিকায় ধারাবাহিক প্রকাশিত হয়। উপন্যাসটির নাম ‘ফাইনাল গাজি’ যা পাঠকদের মুগ্ধ করেছিল। ‘দেশ’ পত্রিকায় ধারাবাহিক প্রকাশের সময় প্রতিসংখ্যায় টানটান উত্তেজনা ও বিশেষ মোড় থাকায় পাঠক সমৃদ্ধ হয়েছিল পড়ে।

এছাড়াও বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তিনি নিয়মিত লিখছেন। বর্তমানে তিনি কয়েকটি উপন্যাস লেখায় হাত দিয়েছেন। আগামীতে বই হয়ে প্রকাশিত হবে। কয়েকটি চলচ্চিত্রের জন্য স্ক্রিপ্ট রেডি করেছেন। আরও কিছু চিত্রনাট্য লেখাতেও হাত দিয়েছেন। আগামীতে সামাজিক কল্যাণে তিনি আরও অনেক মূল্যবান চলচ্চিত্র পরিচালনা করবেন বলে জানিয়েছেন এই প্রতিবেদকে। তিনি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পত্রিকায় প্রবন্ধ ও গল্প লিখছেন। পাঠক সমাজ সমৃদ্ধ হচ্ছে তাঁর লেখা পড়ে।
বাংলা সাহিত্যজগতে তাঁর নিজস্ব পাঠকসমাজ তিনি তৈরি করতে পেরেছেন। প্রকৃতি, পাহাড়, সমুদ্র তাঁকে খুব টানে।

শুধু ভারতবর্ষ নয়, পৃথিবী জুড়ে মুসলিমরা যেভাবে মূল স্রোত থেকে দূরে সরে যাচ্ছে তা তাঁকে গভীর ভাবে ভাবায়, ধর্মীয় ভাবাবেগ আর মৌলবাদ ছেড়ে বিপদগ্রস্তদের ফিরিয়ে আনতে হলে আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি প্রযুক্তি-কারিগরি শিক্ষায় সমাজকে শিক্ষিত করতে হবে। সামাজিক ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষাই সমাজকে মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার একমাত্র পথ বলে তিনি দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করেন।

চরম প্রশাসনিক ব্যস্ততার মধ্যে থেকেও তিনি সমাজকে নিয়ে ভাবেন এবং সমাজকে সুপথে চালিত করতে তিনি বড় উদ্যোগ নিয়েছেন। বিগত ২২ বছর তিনি বিভিন্ন জেলায় মানুষকে সচেতন করতে ইসলামী জলসা গুলোতে গিয়ে বক্তব্য রেখেছেন এবং এখনও রাখছেন। সম্প্রতি দুটি ইসলামী জলসাতে তাঁর মূল্যবান বক্তব্য শোনার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। প্রান্তিক মানুষদেরকে সচেতন করতে তিনি আহ্বান জানান মাটির ভাষায়, আধুনিক শিক্ষা অর্জন করে এগিয়ে আসতে হবে মূল স্রোতে। তিনি নিজেদের মধ্যে মারামারি না করার কথা তুলে ধরলেন জলসাতে।

রাজনীতির মরণ ফাঁদে জড়িয়ে এবং নিজেদের মধ্য মারামারি করে বলি হওয়ার রাস্তা থেকে দূরে থাকার কথাও তুলে ধরলেন। আর তিনি দাঙ্গার প্রচনায় পা না দেওয়ার আহ্বান রাখলেন। দাঙ্গাকারীদের থেকে দূরে থেকে পুলিশ ও প্রশাসনকে কিছু ঘটার আগেই খবর দেওয়ার কথা বললেন।

মানব কল্যাণের জন্য তিনি হাতে কলম তুলে নিয়েছেন, অনেক দিন আগেই।

এবার তিনি কমারশিয়াল চলচ্চিত্র বাংলা সিনেমা পরিচালনা করলেন।

ড. হুুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন, তাঁর পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র “আলেয়া”র শ্যুটিং শেষ হয়েছে কয়েকমাস আগেই। মুক্তির অপেক্ষায় প্রহর গুনছিলল চলচ্চিত্রটি।

”আলেয়া” মানব সমাজে গভীর ভাবে দাগ কাটবেই তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল। এই চলচ্চিত্র নিয়ে তিনি বিশেষ আশাবাদীও ছিলেন। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানালেন, ‘শত কাজের ব্যস্ততার মধ্যেই ছবির শ্যুটিংটা সেরে ফেললাম। কী জানেন, আমরা সবাই সমাজবদ্ধ জীব। সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা আছে। সচেতন মানুষ হিসেবে বলতে পারি আজকের পারিপার্শ্বিক অবস্থান খুব একটা সুখের নয়। কোথাও একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আমার ছবির বক্তব্য বাল্যবিবাহ আর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে।’

তিনি আরও জানালেন, ‘আসলে প্রিন্টের চেয়ে ভিস্যুয়াল এফেক্ট বেশি। যে কথাটা লিখলে হত সেটা ক্যামেরায় বললে আরও আরও বেশি অর্থবহ। সেই জন্যই ছবিটা শেষমেশ হল।’ এই ‘আলেয়া’ একটি থ্রিলার ছবি। ছবিতে অভিনয় করেছেন প্রিয়াংকা সরকার, সায়নী ঘোষ, অংকিতা, তনুশ্রী চক্রবর্তী এবং বাংলাদেশের নায়ক বিশিষ্ট অভিনেতা আমন রেজা। অন্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন, গৌতম হালদার, শেখর সমাদ্দার, খরাজ মুখোপাধ্যায়, সৌম্যজিৎ মজুমদার এবং বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছেন বিখ্যাত অভিনেতা কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় আর পরিচালক ড. হুমায়ুন কবীর ও তাঁর স্ত্রী অন্দিতা কবীর। আরও অনেকেই এই ছবিতে দারুণ কাজ করেছেন এবং ভাল অভিনয় করেছেন। তাঁদের অভিনয় দেখলে আপনিও মুগ্ধ হবেন।

যারা ছবিটি ইতিমধ্যে দেখেছেন তারা অনেকেই বলেছিলেন এই ছবিটি বড় হিট করবে এবং বাংলা চলচ্চিত্রে একটা বিশেষ জায়গা করে নেবে। বাস্তবিক আলেয়া অল্প বাজেটের ছবি হলেও সুপারহিট হল।

বাংলা চলচ্চিত্র পরিচালনায় আইপিএস আধিকারিক ড. হুমায়ুন কবীর এবার আমজনতার মনে সত্যি ব্যাপক ঝড় তুলতে পারলেন। পশ্চিমবঙ্গে বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে নায়ক, নায়িকা, গায়ক, গায়িকা আর পরিচালকের অভাব ছিল দীর্ঘদিন ধরে। এবার আশার আলো দেখালেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও দক্ষ পুলিশ আধিকারিক ড. হুমায়ুন কবীর। তাঁর হাত ধরে এই সাংস্কৃতিক শুন্যতার অবসান ঘটল। বাস্তবিক তিনি মর্যাদার সঙ্গে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে উঠে এলেন। একটা ভাল চলচ্চিত্র বানিয়ে সবার কাছে নিজেকে সফল পরিচালক হিসেবে তুলে ধরতে পারলেন এবং বেশ প্রশংসাও পেলেন ক্রিটিকসদের কাছ থেকে।

‘আলেয়া’ ছবিটির এডিটিং এর কাজ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। তবে ২৯ জুন বিশ্বের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেল এই চলচ্চিত্রটি।

‘আলেয়া’ ছবির কাহিনী বড় টানটান ঘটনার মধ্য দিয়ে এগিয়েছে। সম্প্রতি এডিটিং রুমে বসে এবং প্রিমিয়ার শোতে এই “আলেয়া” চলচ্চিত্রটি আমার দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। ছবিটি সত্যি বলতেন একটা বেস্ট বাংলা ছবি হয়েছে এবং গল্পটি বাস্তবিক সমাজ থেকেই তুলে এনে অনেক সচেতন বার্তা দিয়েছেন পরিচালক।

আগেই আশা ছিল দর্শকমহলে ঝড় তুলবেই “আলেয়া”। বহু সিনেমা হলে হাউসফুল হয়ে রমরম করে করে চলছে চলচ্চিত্রটি।

ছবিটি বিষয়-বৈচিত্র‍্যে ভরপুর। দারুণ চিত্রনাট্য লিখেছেন ড. হুমায়ুন কবীর। তিনি প্রখ্যাত পরিচালক অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে অনেক কিছুই শিখলেন। অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে দারুণ সহযোগিতাও পেয়েছেন তিনি, এই ছবির কাজ সম্পূর্ণ করতে গিয়ে। দ্রুত অনেক কাজও শিখলেন তিনি এই চলচ্চিত্র পরিচালনা করতে গিয়ে।

ছবিতে চার সখীর বাস্তবিক গল্প বলতে চেয়েছেন পরিচালক ড. হুমায়ুন কবীর। চার চরিত্রে তুখোড় অভিনয় করেছেন আলেয়া’র চরিত্রে (প্রিয়াংকা), রুমানা’র চরিত্রে (সায়নী ঘোষ), শ্যামা’র চরিত্রে (অংকিতা) আর সুমনা’র চরিত্রে বিশিষ্ট মডেল ও অভিনেত্রী বাংলা চলচ্চিত্রের এই সময়ের স্বনামধন্য হিট নায়িকা তনুশ্রী চক্রবর্তী। এই চলচ্চিত্রের জন্য তিনি সবার মন কাড়েছেন। এই ছবির নায়িকা তনুশ্রী চক্রবর্তী দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন।

দুইজন মসুলিম চরিত্র ও দুইজন হিন্দু চরিত্র নিয়েই এই ছবি, তাঁদের গল্পই ফুটিয়ে তুলে ধরতে চেয়েছেন পরিচালক ড. হুমায়ুন কবীর। “আলেয়া”র ১৭ বয়সে বিয়ে হয়ে যায়। “আলেয়া” বিয়ে করতে চায়নি, তাঁর সখীদের সঙ্গে সে তখন বারো ক্লাসে পড়ছে। তাঁর সখীরা প্রতিবাদ করেও তাঁর বিয়ে আটকাতে পারেনি। তাঁর বাবা জোর করে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিল। ভারতবর্ষে তখন বড় জটিল রাজনৈতিক পরিবেশের মধ্য দিয়ে চলছিল। তাঁর প্রভাবও পড়ে “আলেয়া”র গ্রাম বসিরহাটে। তাঁর বিয়ের দিন এলাকায় চরম ভাবে দুই সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের মধ্যে দাঙ্গা লাগে। তবু তাঁদের চার সখীকে কেউ আলাদা করতে পারেনি। পরিচালক সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দেওয়ার প্রয়াস নিয়েছেন ওই সময়ের ঘটনা তুলে ধরে।

দুই সন্তানেরর মা আলেয়াকে তালাক দেয় তাঁর স্বামী মাসুম রেজা। অবশ্য বিনা কারণে তাঁর স্বামী জোর করে তাঁকে তালাক দেয়। আলেয়ার জীবনে নেমে আসে চরম ঘাত-প্রতিঘাত। নানান ভাবে জীবন সংগ্রাম করে বেঁচে থাকার লড়াই করে সে।

এই ছবিতে অন্যদিকে সুমনা নিউ টাউন থানায় এসআই পদে আসীন। ছবিটির শুরু হচ্ছে নিউ টাউন থানা থেকে। সুমনার নেতৃত্বাধীন পুলিশ ফোর্স কলকাতার নাইট ক্লাবে হামলার মোকাবিলা করতে যায়। পুলিশ ও সমাজবিরুদ্ধ লোকের মধ্যে গুলি চলে এবং একজন বার ডান্সার গুলি খেয়ে মারা যান। এই ঘটনায় দারুণ মোড় নেয় ছবিটি। সুমনা চরম ভাবে সমালোচিত হন এই ঘটনার জন্য। সে অনেক তদারকি করে নিজের এলাকাতে বদলি হওয়ার জন্য, অবশেষে বসিরহাটে সে পোস্টিং পায় এবং নিজের এলাকায় চলে আসে। হাসনাবাদের ডিএসপি (বাদশা মৈত্র) তাঁকে একটি খুনের তদন্তভার দেয়। তদন্ত করতে গিয়ে সে দেখল এই “আলেয়া” তাঁর একান্ত চার সখীর মধ্যে অন্যতম। “আলেয়া” মার্ডার তদন্তে সুমনাকে সিরিয়াস ভূমিকায় পাওয়া যাবে। আরও অনেক ঘটনা আছে ছবিতে।

বাল্যবিবাহ যে কত ক্ষতি করছে সমাজকে তা সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলার প্রয়াস নিয়েছেন পরিচালক। আশা করা যায় আগামীতে আরও অনেক সামজিক সমস্যা নিয়ে ড. হুমায়ুন কবীর ছবি করবেন সমাজকে সচেতন করতে। সুমনার বিপরীতে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় নায়ক আমন রেজা। একটা গান আছে যা সকলের মন ছঁয়ে যাবেই।

“আলেয়া” চলচ্চিত্রকে ফুটিয়ে তুলতে কিছু শব্দ অব্যবহৃত হয়েছে যেমন, ত্রিশূল গাঁথা, কাফের, আমেদাবাদ, গুজরাট ও জয় শ্রীরাম এই পাঁচটি শব্দই সেন্সর বোর্ড আপত্তিজনক মনে করেছিল এবং সাইলেন্ট করে দিলে তবেই মিলবে ছাড়পত্র। সেন্সর বোর্ড জানিয়ে দিয়েছিল পরিচালক ড. হুমায়ুন কবীরকে। এই শব্দগুলো সাইলেন্ট করে দেওয়া হলে বা একেবারে বাদ দেওয়া হলে তাহলে বেশ কিছু অংশ অর্থহীন হয়ে যাবে। এভাবে সেন্সর বোর্ড বাধা দিলে আমরা প্রান্তিক মানুষের কাছে কোনওদিন পৌঁছাতেই পারব না বলে মত প্রকাশ করেছিলেন “আলেয়া” চলচ্চিত্রের জন্যে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পাওয়ার দাবিদার তনুশ্রী চক্রবর্তী। তবুও সব মিলে বড় পর্দা কাঁপিয়ে দিল চলচ্চিত্রটি।

মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপারিন্টেনডেন্ট পদে থাকার সময় হিরোইন পাচার ও গরু পাচার রুখে দিতে ড. হুমায়ুন কবীর বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন। তিনি অন্যায়কে কড়া হাতে দমন করেছিলেন। আইনের শাসন দিতে তিনি সর্বদা অপরাধীদের রেয়াত করেননি। অনেকের এখনও মনে আছে বহরমপুরের মার্ডার সিন্ডিকেটেরর ঝাপ বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। ৩৩ জন মার্ডার সিন্ডিকেটের গুন্ডাদেরকে ধরে জেলে ভরে দিয়েছিলেন।

মনে পড়ে বামশাসনে তিনি হাত কাটা দিলীপকে হাতে-নাতে ধরে জেলে ভরে দিয়েছিলেন। তিনি গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ান সর্বত্র। তাঁর কাছে ন্যায় বিচার চেয়ে বহু গরিব মানুষ চরম উপকৃত হয়েছেন। আজও মুর্শিদাবাদ জেলার মানুষ তাঁর জন্য মনে প্রাণে আর্শিবাদ করেন। তাঁর কাজের জন্য বাংলার বহু মানুষ তাঁকে মনের মণিকোঠায় রেখেছেন। তিনি সমাজ কল্যাণে আরও অনেক বেশি বেশি কাজ করে সমাজকে সামনে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবেন এই প্রত্যয় এখনও মানুষের মনে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে আগামীতে আরও বড় দায়িত্ব দিয়ে বাংলার পুলিশ প্রশাসনকে ঢেলে সাজাবেন মানুষের কল্যাণে। এই দাবী আমাদের। সচেতন রাজ্যবাসীদের হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, দক্ষ পুলিশ আধিকারিক জাভেদ শামিম ও ড. হুমায়ুন কবীরকে আরও গুরুত্বপূর্ণ পদে দিয়ে আমাদের বাংলার কল্যাণে নিয়োজিত করুন।

আবার চলচ্চিত্র প্রসঙ্গে চলে আসি ‘আলেয়া’ ছবিতে চিত্রগ্রহণে আছেন প্রভাতেন্দু মন্ডল, ফটো তুলেছেন মতিলাল মন্ডল, অন্যান্য ভূমিকায় আছেন আরও অনেকেই।

Super Hit Aleya - A Humayun Kabir Film 6
Super Hit Aleya – A Humayun Kabir Film 6

বাঙালি সমাজকে বিশেষ বার্তা দিল এবং বড় পর্দায় আসল “আলেয়া।”

আরও একটি বড় বাজেটের ছবি পরিচালনার কাজে হাত দিয়েছেন ড. হুমায়ুন কবীর। শুটিং শুরু হয়েছে নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, তনুশ্রী চক্রবর্তী সহ অনেকেই আছেন এই নতুন এই সিনেমাতে।

দক্ষ পুলিশ আধিকারিক ও চলচ্চিত্র পরিচারক ড. হুমায়ুন কবীরের উপন্যাস “ফাইনাল গাজি” আর্ন্তজাতিক কলকাতা বইমেলায় উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যা। “দেশ” পত্রিকায় ধারাবাহিক প্রকাশিত হয়েছিল এই উপন্যাসটি। বইমেলাতে বই আকারে প্রকাশিত হয়। বইটি প্রকাশ করল “আনন্দ পাবলিশার্স।” “ফাইনাল গাজি” উপন্যাসটির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার, রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, গিল্ডের কর্মকর্তা ত্রিদেব চট্টোপাধ্যায় আর ছিলেন দে’জ এর কর্ণধার সুধাংশু শেখর দে। ৪২ বার ঘন্টা বাজিয়ে ৪২তম আর্ন্তজাতিক কলকাতা বইমেলার শুভ সূচনা করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ফ্রাস্নের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার জিগারের উপস্থিতিতে প্রবাদ প্রতিম অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ওইদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত ৯টি গ্রন্থেরও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছিল কলকাতা বইমেলার মূল মঞ্চে। এসবিআই অডিটোরিয়ামে বক্তব্য রাখার সময় মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন আগামী বছর ১৯ জানুয়ারি ২০১৯-এ কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার শুভ সূচনা হবে।

আলেয়া খ্যাত লেখক ও ডিরেক্টর ড. হুমায়ুন কবীর রচিত আরও বই প্রকাশিত হবে বইমেলাতে।

About Post Author

Editor Desk

Antara Tripathy M.Sc., B.Ed. by qualification and bring 15 years of media reporting experience.. Coverred many illustarted events like, G20, ICC,MCCI,British High Commission, Bangladesh etc. She took over from the founder Editor of IBG NEWS Suman Munshi (15/Mar/2012- 09/Aug/2018 and October 2020 to 13 June 2023).
Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Advertisements

USD





LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here