Read Time:4 Minute, 6 Second
পয়লা বৈশাখ থেকে নলবনে ঝিলের পাড়ে বসবে শহুরে হাট
“হাট বসেছে শুক্রুবারে , মুন্সীগঞ্জের পদ্মা পারে” এ যেন কবির কবিতা কে বাস্তবের মাটিতে নামিয়ে আনার প্রচেষ্টা | তবে পদ্মা পাড়ের নয় গঙ্গা পাড়ের কোলকাতা শহরে|
খোদ কলকাতায় দৈনন্দিন গেরস্থালির যাবতীয় উপকরণ নিয়ে হাট বসতে চলেছে। সৌজন্যে মৎস্য দপ্তর। এখানে একদিকে মাছ-মাংস, সব্জি তো বিক্রি হবেই, অন্যদিকে হাতের কাজের বিভিন্ন সম্ভার নিয়ে হাজির হবেন প্রত্যন্ত গ্রামের শিল্পীরা। নলবনের জলাশয়ের পাড়ে খোলা মাঠে ঘুরতে ঘুরতে কেনাকাটা করবেন শহরের বাসিন্দারা।
শান্তিনিকেতনে সোনাঝুরির হাট, হাওড়ার মঙ্গলা হাট বা হরি সাহার হাটের মতো এখনও শহর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বহু হাট রয়েছে। কিন্তু, এর অনেকগুলিরই পুরনো ঐতিহ্য এখন অনেকটাই ম্লান। তাই এবার সেই হাটের ঐতিহ্য এবং ব্যবসায়িক গুরুত্বকে বোঝাতেই নলবনে ভেড়ির পাশে বসবে নগরায়িত হাট। মৎস্য দপ্তরের অধীনস্থ মৎস্য উন্নয়ন নিগমের পক্ষ থেকে এই হাট বসানো হচ্ছে।
নলবনের কাছেই তথ্যপ্রযুক্তি তালুক। এখানে প্রচুর মানুষ কাজ করতে আসে। সপ্তাহান্তে যদি তাঁরা জলাশয়ের পাশে একটু ‘স্ন্যাক্স’ খেতে খেতে জরুরি সমস্ত সামগ্রী পেয়ে যান, তাহলে অনেকেই হাটে আসতে চাইবেন। সেই কথাকে মাথায় রেখেই সপ্তাহান্তের বিকেলে এই হাট বসানো হবে। পয়লা বৈশাখ থেকে বসবে এই হাট।
প্রসঙ্গত, নলবনের ওই মাঠে ইতিমধ্যে একাধিক বাঙালি-কন্টিনেন্টাল খাবারের রেস্তরাঁ আগে থেকেই রয়েছে। পাশাপাশি নিগমের পক্ষ থেকে কাঁচা প্যাকেটজাত মাছ বিক্রি করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে রান্না মাছের বিভিন্ন পদও বিক্রি করা শুরু হয়েছে। হরিণঘাটা থেকে কাঁচা মাংস সহ বিভিন্ন পদ বিক্রি করা হচ্ছে। সুফল বাংলাও ইতিমধ্যে দোকান দিয়েছে সেখানে। ফলে কাঁচা সব্জি থেকে আরও বিভিন্ন রান্নার সামগ্রী সেখানে বিক্রি করা হবে।
সেই তালিকায় এবার নতুন সংযোজন হাতের কাজের সম্ভার। আনন্দধারা প্রকল্পের অধীনে যে সমস্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠী রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে, তাদের নলবনের হাটে আনা হবে। প্রত্যেক সপ্তাহে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা সেখানে এসে নিজেদের হাতে তৈরি বড়ি, আচার, পাঁপড় ছাড়াও হাতের কাজের বিভিন্ন ব্যাগ, শৌখিন ঘর সাজানোর জিনিস বিক্রি করতে পারবেন। এর মাধ্যমে গ্রামীণ মহিলারা যেমন নিজেদের সামগ্রী বিক্রির একটা নতুন জায়গা খুঁজে পাবেন, সেই সঙ্গে শহুরে ক্রেতারাও বিভিন্ন সামগ্রী কিনতে পারবেন নিজের হাতে দেখে নিয়ে।
সর্বোপরি জলাশয়ের পাড়ে ঘুরতে ঘুরতে একেবারে গ্রামীণ পরিবেশেই ‘হাটে’র মজা নিতে পারবেন কলকাতাবাসী।
Advertisements